তৃণমূল কংগ্রেস মধ্য কলকাতায় কাল বৃহস্পতিবার তাদের শহীদ দিবস পালন করবে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ শীর্ষ নেতৃত্বরা ওই সমাবেশে ভাষণ দেবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক সংসদ সদস্য বলেছেন, লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করার নির্দেশ মমতা কালকের সমাবেশে দিতে পারেন।
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই তৎকালীন যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী এবং কেন্দ্রের ক্রীড়ামন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বামফ্রন্টের প্রশাসনিক সদর দপ্তর রাইটার্স বিল্ডিংয়ে কংগ্রেসের নেতা–কর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ অভিযান চালান। সেই বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি চালালে ১৩ জন নিহত হন। তাঁদের স্মরণে ২১ জুলাই শহীদ দিবস পালন করে তৃণমূল। মমতার বিক্ষোভের রাজনীতি সেই দিন থেকেই শুরু হয়।
আর মাত্র দেড় বছর পর ভারতের লোকসভা নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কাল মমতা কী বলেন, তা দেখার অপেক্ষায় থাকবেন রাজ্য ও ভারতের অন্যান্য প্রদেশের মানুষ।
গত এক সপ্তাহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সমালোচক এবং বিজেপির প্রধান সেনাপতি আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে দুই ঘণ্টা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও ছিলেন। এই বৈঠকের পরই বিজেপি উপরাষ্ট্রপতি পদে ধনখড়ের নাম ঘোষণা করে। আগামী ৬ আগস্ট উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ধনখড়কে সমর্থন দেবে নাকি বিরোধী জোটের প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে—সে নিয়েও কিছু দিকনির্দেশনা মমতা দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মমতা কতটা কড়া ভাষায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে আক্রমণ করছেন বা আদৌ করছেন কি না, সেটা নিয়েও আগ্রহ রয়েছে।
ভারতে সংখ্যালঘু সমাজের অবস্থা, সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক দুরবস্থা মমতার ভাষণের বিষয় হবে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি তাঁর ভাষণের একটা অংশজুড়ে থাকতে পারে।
মমতা এসব ক্ষেত্রে প্রতিবারই দলীয় শৃঙ্খলার ওপর জোর দিয়ে নেতা–কর্মীদের সাবধান করে দেন। কালও তিনি তা করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। সমাবেশে যোগ দিতে শত শত মানুষ কলকাতায় আসছেন। তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের বিভিন্ন স্টেডিয়াম, মাঠ এবং কিছু স্কুলে শিবির স্থাপন করে তাদের রাখছে, খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর মধ্য কলকাতার ধর্মতলায় তৃণমূলের শহীদ দিবসের অনুষ্ঠান হয়নি। মমতা ভাষণ দিয়েছিলেন অনলাইনে। ২০২১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস জেতার পর এটা শুধু শহীদ দিবসের অনুষ্ঠান নয়, তৃণমূলের বিজয় মিছিলও বলা যেতে পারে।
কলকাতায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। একাধিক উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা এবং সাধারণ পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকবেন।
শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে গিয়ে স্থানীয় নেতাদের ওপর একধরনের আর্থিক চাপ পড়ছে। কলকাতার একটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সবাই বলে আমরা টাকা তুলি। তিন দিন ধরে পার্টি থেকে কোনো পয়সাকড়ি না নিয়ে ১০ হাজার লোকের থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থা করছি। প্রতিবারই করি। কী আর বলব বলুন।’
কাল কলকাতাসহ বেশ কিছু জায়গাতেই যানবাহন চলাচল কম থাকবে। কয়েক জায়গায় স্কুলও বন্ধ থাকবে।
নির্বাচনের নির্বাচনের নির্বাচনের নির্বাচনের