আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোর উত্তরাঞ্চলীয় একটি গ্রামে সন্ত্রাসীদের হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির সরকারের এক মুখপাত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে।
মৃতের সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল সোমবার বুরকিনা ফাসোর নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, কমপক্ষে ১০০ মানুষ নিহত হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, এ ঘটনায় ১৬৫ জনের মতো প্রাণ হারিয়েছে।
সেনো প্রদেশে সেতেঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গত শনি ও রোববার রাতে সশস্ত্র হামলা হয়েছে। সেনো প্রদেশটি বুরকিনা ফাসোর সীমান্তবর্তী এলাকা। জঙ্গিগোষ্ঠী আল–কায়েদা ও আইএস সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র ব্যক্তিরা সেখানে বেশ তৎপর।
গতকাল বুরকিনা ফাসো সরকারের মুখপাত্র লিওনেল বিলগো বলেন, সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত ৫০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
জাতিসংঘ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নও এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে সেতেঙ্গা প্রদেশে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ১১ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর সেনাবাহিনী সশস্ত্র বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। সেনাবাহিনী দাবি করেছে, এ অভিযানে ৪০ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছে।
সরকারের মুখপাত্র বিলগো বলেন, সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডের প্রতিশোধ হিসেবে এ রক্তপাত ঘটানো হয়েছে। দেশের ওপর আঘাত করা হয়েছে। তবে সেনাবাহিনী তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
অঞ্চলটিতে নিয়োজিত মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো বলছে, সেতেঙ্গা প্রদেশের ওই গ্রাম থেকে আশপাশের শহরগুলোয় প্রায় তিন হাজার মানুষ পালিয়ে গেছে। বুরকিনা ফাসোতে গত জানুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর যে কয়টি বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটেছে, তার একটি এটি।
সশস্ত্র গোষ্ঠীকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে জানুয়ারিতে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রোক মার্ক ক্রিস্টিয়ান কাবোরেকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী। বর্তমানে দেশটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পল হেনরি সান্দাওগো দামিবা। দায়িত্ব নিয়েই দেশের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।