বিশ্বের সব স্থানেই নারী পুরুষ এ বিভেদ লক্ষ্য করা যায়। সমাজ, জাতি, সংস্কৃতি সবকিছুতেই নারী ও পুরুষের বিভেদ দৃষ্টিগোচর হয়। এ কারণে নারীরা আজও সমতা ও নিজেদের অধিকার অর্জনে সমাজের সঙ্গে লড়াই করছে। তবে কখনও কি শুনেছেন, একই গ্রামের বাসিন্দারা কথা বলছেন ভিন্ন ভাষায়!
নারীর জন্য এক ভাষা আর পুরুষের জন্য ভিন্ন। এমনই ঘটনার সাক্ষী নাইজেরিয়ার একটি গ্রাম উবাং। তারা একই সমাজে বেড়ে ওঠে, তবে কথা বলে ভিন্ন ভাষায়।
একটি শিশু বেড়ে ওঠার সময় তার অভিভাবকেরা ভাষাগত পার্থক্য তাদেরকে শিখিয়ে দেন। শিশুরাও বেড়ে ওঠে নিজেদের ভাষার মধ্যেই। যদি একটি শিশু নিজের ভাষা শিখতে অসমর্থ হয়, তাহলে তা অস্বাভাবিক বলে ধারণা করা হয়।
মজার বিষয় হলো, উবাং গ্রামের নারী ও পুরুষের ভাষা ভিন্ন হলেও তারা একে অপরের ভাষা ঠিকই বুঝতে পারেন। কারণ বাল্যকাল থেকেই তারা এসব শব্দ শেখেন।
নারী-পুরুষ বিভেদে তাদের শব্দেরও পার্থক্য আছে গ্রামটিতে। যেমন- পোশাক এর জন্য পুরুষরা বলেন ‘নিকি’ আর নারীরা বলেন ‘এরিগা’। আবার গাছকে পুরুষরা ‘কিচি’ আর নারীরা ‘ওকেওয়েং’ বলেন। এগুলো কেবল কিছু সূক্ষ্ম উচ্চারণগত পার্থক্য নয় বরং সম্পূর্ণ ভিন্ন শব্দ।
উবাং গ্রামের নিয়ম হলো ১০ বছরের পর থেকেই ছেলে-মেয়েরা নিজেদের ভাষায় কথা বলবে। তবে কেন উবাং গ্রামে এমন অদ্ভুত রীতি মেনে চলা হয়?
যদিও এ বিষয়কি রীতি কেন চালু হয়েছিল তা কারও জানা নেই। তবে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা ধর্মীয় তত্ত্ব পছন্দ করে। হয়তো ধর্মীয় কোনো কারণেই এমন রীতির প্রচলন ঘটে। উবাং গ্রামটি বিশ্বের অন্যান্য সম্প্রদায়ের থেকে আলাদা।
নৃবিজ্ঞানী চি চি উন্ডি বলেন, ‘দ্বৈত লিঙ্গ সংস্কৃতি আফ্রিকার বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়। এর ফলে নারী ও পুরুষে বিভেদ তৈরি হয়। এটি একটি দুর্বল তত্ত্ব। নারী-পুরুষ হয়তো ভিন্ন কাজ করে থাকেন তবে তাতে ভাষাগত পার্থক্য থাকা উচিত নয়।’
বর্তমানে শিক্ষার প্রসার ঘটায় নাইজেরিয়ার তরুণরা ইংরেজি ভাষায় কথা বলছেন। এর ফলে উবাং এর দুটি ভাষার প্রয়োগ অনেকটাই কমতে শুরু করেছে।
২০১৬ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী নাইজেরিয়ার লিঙ্গুইস্টিক অ্যাসোসিয়েশন জানায়, কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে; পরবর্তী ৫০০ বছরের মধ্যে সেখানকার ৫০০টি ভাষার মধ্যে ৫০টি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
৪০ বছর না ঘুমিয়েও সুস্থ আছেন যে নারী
বিগত ৪ দশকেও এই নারী ঘুমাননি। তবুও তিনি ফিট ও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। সম্প্রতি চীনা গণমাধ্যমে ওই নারীর উদ্ভট ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তার নাম লি ঝানাইং। এ বিষয়টি তার স্বামী, প্রতিবেশী ও বন্ধুরাও নিশ্চিত করেছেন। তারাও লি ঝানাইংয়ের না ঘুমানোর সত্যতা যাচাই করেছেন। এমনকি চিকিৎসকরাও তার অনিদ্রার রহস্য ভেদ করতে পারেননি!
লি ঝানাইংয়ের দেওয়া তথ্য মতে, তিনি সর্বশেষ ৫-৬ বছর বয়সে ঘুমিয়েছিলেন। এরপর কেটে গেছে ৪০টি বছর। তবুও তার চোখে ঘুম আসেনি। লি ঝানাইংয়ের বসবাস হেনান প্রদেশের ঝংমু কাউন্টির একটি গ্রামে। লি তার গ্রামে বেশ পরিচিত। কারণ সবাই তার না ঘুমানোর এই অস্বাভাবিক বিষয়টি জানেন।
লি’র প্রতিবেশীদের কয়েকজন জানান, একবার লি’র না ঘুমানোর বিষয়টি পরখ করতে গিয়ে তারাই ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এরপর তারা ঘুম থেকে উঠে দেখেন লি সেখানেই ঘুমহীন চোখে জেগে বসে আছেন।
এদিকে লি’র স্বামী লিউ সুকুইনও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি কখনও তার স্ত্রীকে ঘুমাতে দেখেননি। তিনি জানান, তার স্ত্রীর ঘুমের প্রয়োজনই পড়ে না। বিয়ের পর থেকেই তিনি দেখছেন দিন-রাত জেগে শুধু লি কাজ করে বেড়ান।
তার শরীরে ক্লান্তি বা অসুস্থতারও কোনো ছাপ নেই। স্ত্রীকে ঘুমাতে বলেও লাভ হয়নি। তিনি জানান ঘুমাতে পারেন না। এমনকি বিয়ের প্রথম দিকে লিউ অনিদ্রার সমস্যা ভেবে স্ত্রীর চিকিৎসা করান। ঘুমের ওষুধ খেয়েও লি’র ঘুম আসেনি বলে জানান তার স্বামী লিউ।
লি ঝানাইং ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত অনেক চিকিৎসকের শরনাপন্ন হয়েছেন। তবে কেউই কোনো সমস্যার খোঁজ দিতে পারেননি। তার মানে লি একেবারেই সুস্থভাবে বেঁচে আছেন। তবে বেইজিংয়ের একটি মেডিকেল সেন্টার সম্প্রতি লি’র না ঘুমানোর বিষয়টির রহস্য উদঘান করেছেন।
চিকিৎসকের একটি দল লি’কে টানা ২ দিন অর্থাৎ ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় তারা উন্নত সেন্সর ব্যবহার করেছিলেন। ৪৮ ঘণ্টার ব্রেইনওয়েভ পর্যবেক্ষণের সময় দেখা যায়, লি’র ঘুম পেয়েছিল। তবে তা একেবারেই হালকা।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো সাধারণ মানুষ যেমন চোখ বন্ধ করে ঘুমায় লি’র বিষয়টি পুরোপুরি উল্টো। অর্থাৎ লি ঝানাইং চোখ বুঝে নয় জেগে এমনকি কথা বলা বা কাজের মধ্যেও ঘুমাতে পারেন। চিকিৎসকরা এই ঘটনাটিকে ‘জেগে ঘুমানো’ বলে বর্ণনা করেছেন।
অনেকেরই ঘুমের মধ্যে হাঁটার অভ্যাস থাকে। ঠিক তেমনই লি ঝানাইংয়ের বিষয়টিও। দেখলে মনে হবে তিনি সারাদিন জেগে আছেন। আসলে জেগে থাকা অবস্থাতেই তিনি ঘুমান। তবে তার স্নায়ু ও অঙ্গ ঘুমের মধ্যেও সক্রিয় থাকে।
চিকিৎসকরা বলেন, লি’র বিষয়টি সত্যিই বিস্ময়কর। আসলে লি যখন বিশ্রাম নেন তখনই তিনি ঘুমান। যেটি লি নিজেও বুঝতে পারেন না। তার ঘুমের সময়টুকুও যথেষ্ট কম। তবুও তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ্য, যা সত্যিই রহস্যজনক।
দিনে মাত্র ১০ মিনিটের বেশি ঘুমান না তিনি। এমন ঘুম তো না ঘুমানোর মতোই। তাই দাবি অনুসারে, ৪০ বছর না ঘুমিয়ে কাটানোর বিষয়টি অনেকটা সত্যিই বটে!
গিনেস বুকে রেকর্ড করলেন ১০০ তম জন্মদিনে ভারত্তোলন করে
বয়স অনেকের কাছে কেবল একটি সংখ্যা মাত্র। সেটিই আরেকবার প্রমাণ করলেন যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লোরিডার বাসিন্দা এডিথ মারওয়ে ট্রাইনা। বয়সের বাধাকে পেছনে ফেলে শক্তি আর সাহসে ভর করে গিনেস বুকে ঠাঁই করে নিয়েছেন তিনি।
গত ৮ আগস্ট ছিল এডিথ মারওয়ে-ট্রাইনার ১০০ তম জন্মদিন। এ উপলক্ষ্যে ভারত্তোলন করার পর সবচেয়ে বেশি বয়সী ভারত্তোলক হিসেবে তাকে স্বীকৃতি দেয় গিনেস বিশ্ব রেকর্ড কর্তৃপক্ষ।
গিনেস বিশ্ব রেকর্ড কর্তৃপক্ষ তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। তারা লিখেছে, এডিথ ৪০ থেকে ১৫০ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন তুলে বিচারক আর দর্শকদের একদম তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
সাবেক নাচের শিক্ষক এডিথ। ৯০ বছর বয়সে এসে ভারত্তোলনের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় তার।
এডিথ মারওয়ে ট্রাইনা সংবাদসংস্থাকে বলেন, আমি ৯১ বছর বয়স থেকে নিয়মিতভাবে ভারত্তোলন শুরু করি। কখনো ভাবিনি নিয়মিতভাবে এটি চালিয়ে যেতে পারব। তবে আমি কোনো রেকর্ডের আশায় ভারত্তোলন শুরু করিনি।
এ বিষয়ে এডিথের মেয়ে হানি কট্টরেল গিনেস বিশ্ব রেকর্ড কর্তৃপক্ষকে বলেন, মা এই স্বীকৃতি পাওয়ায় পুরো পরিবার ভীষণ খুশি। মায়ের এই বিশ্ব রেকর্ডে আমরা খুব সম্মানিত বোধ করছি।
এডিথের এই রেকর্ডে গিনেস বিশ্ব রেকর্ড কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি নেটিজেনরাও ভীষণ অবাক। এই বয়সে ভারত্তোলনের মতো শরীরিক কসরতের জন্য প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন তাকে।
বিভিন্ন ফুলের ছবি
পৃথিবীর ৫ বিপজ্জনক রাস্তা
উন্নতির চরম শিখরে যাওয়া পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এখনও রয়েছে অনেক বিপজ্জনক রাস্তা। জেনে নিন কোন স্থানে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তা।
হিমালয়ের রাস্তা:
এই রাস্তাটি নাম ‘হিমালয়ের রাস্তা’। এই রাস্তায় চলতে গিয়ে একটু ভারসাম্য হারালেই পথচারীর নিশ্চিত মৃত্যু।
চীন সুড়ঙ্গ:
সুড়ঙ্গের ভিতর দিয়ে নির্মিত এই রাস্তাটির দৈর্ঘ ১২০০ মিটার। ৫ বছর সময় ধরে এই রাস্তাটি তৈরি করেছে চীন। বিপদ জনক এই রস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন জীবন জীবীকার তাগিদে অনেক মানুষ চলাচল করে।
মৃত্যুর রাস্তা:
প্রতিবছর এই রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে প্রায় ২০০ জন মানুষ প্রাণ হারায়। বলিভিয়ার দীর্ঘ রাস্তাটিকে তাই ‘রোড অব ডেথ’ বা মৃতুর রাস্তা বলা হয়ে থাকে।
কারাকোরাম হাইওয়ে:
এই রাস্তাটি পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। ১৬ হাজার ফুট দীর্ঘ এ রাস্তাটি বিশ্বের ভয়ানক বিপজ্জনক রাস্তার মধ্যে অন্যতম।
ডাল্টন হাইওয়ে:
এই রাস্তাটি আলাস্কার জনশূন্য এলাকায় অবস্থিত। এই রাস্তা পার হতে গিয়ে এ যাবৎ অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
অপরূপ রূপের বিষাক্ত ফুল, যা মৃত্যুর কারণ
সৌন্দর্যের দিকে আকর্ষণ ক্ষতির কারণও হতে পারে। তেমনই একটা উদাহরণ কিছু বিষাক্ত ফুল। পৃথিবীতে এমন কিছু ফুল রয়েছে যা প্রচন্ড বিষাক্ত। এসব ফুলের কারণে মৃত্যুও হতে পারে। ফুলের সৌন্দর্য্য দেখে কোনোভাবেই বোঝার উপায় নেই কোন ফুলটি তার স্বর্গীয় সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে রেখেছে ভয়াবহ মৃত্যুফাঁদ।
কিছু ফুলের বাহ্যিক রুপ আপনাকে মুগ্ধ করবে ঠিকই, কিন্তু ভেতরের রুপ হতে পারে আপনার মৃত্যুর কারণ। প্রথমেই শুরু করি আমাদের দেশীয় ফুল ধুতরা দিয়ে।
১। ধুতরা ফুল:
ধুতরা ফুল খেলে কি হয়:
আমাদের দেশে ঝোপ-ঝাড়ে বা রাস্তার ধারে অযত্নে বেড়ে ওঠে ধুতরা গাছ। ধুতরা ফুল দেখতে শুভ্র পবিত্র হলেও এটি একটি বিষাক্ত ফুল। বিষাক্ত গাছ হিসেবে ধুতুরা গাছ খুব এগিয়ে। এতে আছে বিপজ্জনক মাত্রার ট্রোপেইন নামক বিষ। এই গাছের বিষক্রিয়ায় মানুষ বা পশুপাখির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
এ কারণে অনেক দেশেই ধুতুরার উৎপাদন, বিপনন ও বহন আইনত নিষিদ্ধ। বাংলাদেশে প্রতি বছর বহু লোক ধুতুরা বিষে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।এই ফুল খেয়ে মৃত্যুর ঘটনাও অনেক শোনা যায়। তাই ধুতরা ফুলকে শয়তানের শিঙ্গা বলা হয়। তবে আমাদের সাধারণ জ্ঞানে এ ফুল সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব থাকলেও সৃষ্টিকর্তা মানুষের কল্যাণের জন্যই সৃষ্টি করেছেন এ ফুল।
ধুতরা ফুল বিষাক্ত হলেও ধুতুরার বীজ থেকে চেতনানাশক পদার্থ তৈরি করা হয়। ভেষজ চিকিৎসায় এর ব্যবহার আছে। চৈনিক ভেষজ চিকিৎসা শাস্ত্রে বর্ণিত পঞ্চাশটি প্রধান উদ্ভিদের একটি এই ধুতরা।
২। করবী ফুল:
করবী ফুলের উপকারিতা
করবী ফুল আমাদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত। ইংরেজী নাম অলিয়েন্ডার। বিশ্বে নানা রং ও নানা আকারের অলিয়েন্ডার রয়েছে। যেমনঃ শ্বেত করবী, হলুদ করবী ও রক্ত করবী। এই ফুল দেখতে আকর্ষনীয় হলেও মানুষের শরীরে প্রচন্ড রকমের বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এর মাত্র একটি পাতা খেলেই মানুষের মৃত্যু হতে পারে। কারন আগাগোড়া বিষে মোড়া এই ফুল ও ফুলের গাছ।
করবী ফুল নিয়ে কবিতা
তাই এই গাছের সব অংশই বেশিরভাগ মেরুদণ্ডীপ্রাণীর জন্য বিষাক্ত। এতে হৃৎপিণ্ডের জন্য ক্ষতিকারক গ্লাইকোসাইড থাকে। এই উপমহাদেশ ও অন্যান্য কিছু পার্শ্ববর্তী উপমহাদেশে করবী ফুলের বিষে আত্মহত্যা করার সংখ্যাটাও খুব একটা কম নয়। সামান্য পানির মাধ্যমেই নিজের বিষ মানবদেহে ছড়িয়ে দিতে পারে এই ফুলটি।
করবী যে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, ঠিক একই সমস্যার সমাধানেও ঠিক তাকেই কাজে লাগানো সম্ভব। করবী ফুল গিলে ফেললে এর প্রভাবে হৃদস্পন্দন ধীর হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, একই ফুলের নির্যাস হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রতিরোধেও কাজে লাগানো হয়। পাশাপাশি মৃগী রোগ, অ্যাজমা, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধকল্পেও এই ফুলের নির্যাস ব্যবহার করা হয়।
৪) হেমলক (Hemlock):
হেমলক সোসাইটি:
হেমলক একটি বিষাক্ত ফুল গাছ। এটি যেকোন পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে। বিষাক্ত হেমলকের ফুল ছোট ও সাদা, সাধারনত বসন্তে ফোটে। আধুনিক গবেষনায় হেমলক প্রানীদের জন্য বিষাক্ত প্রমানিত হয়েছে। এর যে কোন অংশ গ্রহনে মানুষ বা প্রাণীর মৃত্যুও হতে পারে, তবে শিকড় বেশি বিষাক্ত। লক্ষনসমূহের মধ্যে রয়েছে মাথা ঘোরা, পেটব্যাথা, বমি ও আরো বিভিন্নরকম প্রদাহ।
৫) পয়জন হেমলক:
পয়জন হেমলক এমন একটি আগাছা যা প্রাণী এবং মানুষের কাছে এর বিষাক্ততার জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এটিতে পাইপরিডিন অ্যালকালয়েডস কনইইন, এন-মিথাইলকোনিন, কনহাইড্রাইন এবং কনসাইন রয়েছে যা অন্যান্য হিমলক ক্ষারকোষগুলির পূর্বসূরী।
পয়জন হেমলক ফুলের উৎপত্তি মূলত ইউরোপ ও আফ্রিকায়। অবশ্য পরবর্তীকালে উত্তর আমেরিকা, এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াতেও ঘটেছে এর আগমন। এটি এতটাই ভয়ানক যে, শখের বশে কেবলমাত্র গন্ধ শোঁকাও আপনার মৃত্যুর কারণ হতে পারে! পয়জন হেমলক শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ করে একজন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটাতে পারে। বিখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিসের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে পয়জন হেমলকই ব্যবহার করা হয়েছিল।
৬) রডোডেনড্রন :
রডোডেনড্রন ফুল
লাল রঙের অসম্ভব সুন্দর দেখতে ফুলটির বাসস্থান এশিয়া, যদিও লাল ছাড়াও রডোডেনড্রন অন্য রঙের হয়। বসন্তের শেষের দিকে ফোটে। এই ফুল গাছটির সব অংশই বিষাক্ত। একটি প্রাচীন বিবরণ অনুসারে, এই ফুল থেকে আহরিত মধু দিয়ে আক্রমনকারী সেনাবাহিনীর জন্য মৃত্যু ফাঁদ পাতা হয়েছিলো তুর্কির পন্টাস অঞ্চলে। এই ফুলটি এখন তুর্কিতে মায়া মধু তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
৭) উপত্যাকার লিলি :
উপত্যাকার লিলি বা Lily of the Valley একটি মিষ্টি যুগন্ধযুক্ত, দুল আকৃতির সাদা ফুল। এই উদ্ভিদের সব অংশই বিষাক্ত; ভুল করে সামান্য পরিমাণ লিলি অভ দ্যা ভ্যালী খেয়ে ফেললে পেট ব্যাথা, বমি, হৃদস্পন্দন কমে যাওয়া, চোখে ঘোলা দেখা এবং শরীরের লাল-লাল দানা দেখা যেতে পারে, অতিদ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মৃত্যুও হতে পারে।
৮। জানটেডেসিয়া:
জানটেডেসিয়া নামক এই অত্যন্ত সুন্দর ও বিভিন্ন রঙ এর ফুলটিকে কলা লিলি বলেও চেনে অনেকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খুঁজে পাওয়া যায় এই ফুলগুলোকে। তবে আর দশটা ফুলের চাইতে একটু ভিন্ন, কলা লিলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক পদার্থ।
মাত্র একটি পাতার মাধ্যমে মানুষকে মৃত্যুর দোরগোড়ায় পোঁছে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই ফুলের। একবার চীনের একটি রেষ্টুরেন্টে খাবারের ভেতরে ভুল করে একটি কলা লিলির পাতা পড়ে গেলে পুরো খাবারটি বিষাক্ত হয়ে ওঠে এবং রেষ্টুরেন্টের সবাইকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়।
৯। অটাম ক্রোকাস:
দেখতে অন্য অনেক ফুলের চেয়ে সুন্দর এবং বিষাক্ততায়ও ভয়াবহ এমন একটি ফুল হলো- অটাম ক্রোকাস। অটাম ক্রোকাসের আরেক নাম ন্যাকেড লেডি বা নগ্ন নারী। সাধারণত শরৎকালেই এ ফুল ফোটে। এর বিষ আর্সেনিকের মতোই তীব্র।
চোখ ধাঁধানো বর্ণিল এ ফুলটি পরিচিত ‘রূপসী মৃত্যুফুল’ নামে। এ ফুলটির কিছু উপাদান দিয়ে ওষুধ তৈরি হলেও ফুলটি খেলে তা মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং এখন পর্যন্ত এ বিষের কোনো প্রতিষেধকও আবিষ্কৃত হয়নি।
১০। বেলাডোনা:
বেলাডোনার আরেক নাম ভয়াবহ রাতের ছায়া। এর অর্থ ‘সুন্দরী নারী’। ফুলটিতে থাকা ট্রপেন এ্যালকলাইডিস নামে বিষের কারণে মাথাব্যথা, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি ইত্যাদি সমস্যা হয়। রানী প্রথম এলিজাবেথের সময় কেউ কেউ না বুঝে এ ফুলটি প্রসাধনসামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করতেন।
বিষাক্ত হলেও সেই প্রাচীণকাল থেকেই ওষুধ ও প্রসাধনসামগ্রীতে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মধ্যযুগে শল্যচিকিৎসকরা রোগীদের অজ্ঞান করার সময় এ্যানেসথেটিক হিসেবে এটি ব্যবহার করতেন। প্রাচীন রোমে বিষ হিসেবে এ ফুল ব্যবহার করা হতো। রটনা রয়েছে- রোমান সম্রাট অগাস্টাস ও তার স্ত্রী ক্লডিয়াসকে এই বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছিল।
সেন্টিনাল, বঙ্গোপসাগরের রহস্যময় দ্বীপ
ভৌগলিকভাবে পৃথিবীতে এমন খুব কম জায়গায়ই আছে যেখানে মানুষের পা পড়েনি। দুর্গম, দুর্ভেদ্য সব আনাচে-কানাচে নিজের বাসাবাড়ির মত মানুষ চষে বেড়িয়েছে। এরপরেও এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে মানুষ হাজার চেষ্টা করেও যেতে পারেনি। ২০২০ সালে এসেও এমন জায়গার কথা আসলে কল্পনা করাও কঠিন। তবে আমাদের বঙ্গোপসাগরের খুব কাছে ভারত মহাসাগরে এমন একটি দ্বীপ আছে যেখানে আজও যেতে পারে নি মানুষ। এই দ্বীপটির নাম সেন্টিনাল দ্বীপ।
অনেক আগেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীও এই দ্বীপটি দখলে নিতে চায়। কিন্তু তারাও এই ব্যাপারে সফল হয় নি। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই দ্বীপের কিছু মানুষকে বন্দী করে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল কিছু মানুষের সাথে সুসম্পর্ক করে তাদেরকে আয়ত্তে আনা। কিন্তু বন্দীর কিছুদিন পরেই তারা মারা যায়-যে কারণে তাদের এই উদ্দেশ্যও সফল হয়নি।
ভৌগলিকভাবে সেন্টিনাল বঙ্গোপসাগরে হলেও রাজনৈতিকভাবে এটির দায়িত্ব ভারতের। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বহুবার দ্বীপের মানুষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও দ্বীপের মানুষরা এই ব্যাপারে কোন প্রকারের আগ্রহই দেখায় নি! বহুভাবে বহু চেষ্টা করেও দ্বীপের আদিবাসীদের ব্যাপারে কোন কিছুই জানা সম্ভব হয় নি। এরা এতটাই হিংস্র যে হেলিকপ্টার দেখলেও এরা তীর বল্লম ছুড়ে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।
২০০১ সালে ভারতের ট্রাইবাল ম্যানেজমেন্টের মহাপরিচালক টিএন পন্ডিতের নেতৃত্বে দ্বীপের অধিবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। প্রাথমিক ভাবে দ্বীপটির তীরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপহার রেখে আসা হত। যেমন, খাবার, পোশাক ইত্যাদি। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। তবে বিভিন্ন ভাবে এই দ্বীপ সর্ম্পকে কিছু তথ্য বাইরের মানুষের কাছে আছে। এরমধ্যে অন্যতম হল ভাষা ও হিংস্রতা। ধারণা করা হয় দ্বীপ অধিবাসীরা আন্দামানিক ভাষার কাছাকাছি এক ধরনের ভাষা ব্যবহার করেন। জাতিগত ভাবে তারা শিকারী জনগোষ্ঠী।
ধারণা করা হয় ৬০ বর্গ কিলোমিটারের এই দ্বীপটিতে চারশ থেকে পাঁচশ মানুষের বাস। সেন্টিনাল দ্বীপের মানুষ কৃষি কাজ করতে পারে না। এমনকি তারা আগুনও জ্বালাতে জানে না। ২০০৪ সালে সুনামিতে দ্বীপটিতে ব্যপক ক্ষতি হয়। সেন্টিনালের অধিবাসীরা বেঁচে আছে কিনা দেখার জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে একটি হেলিকপ্টার পাঠানো হলে দ্বীপের লোকজন হেলিকপ্টারের দিকে তীর ছুড়ে জানান দেয়, সুনামির ক্ষয়-ক্ষতির পরেও তারা অক্ষত আছে।
এরপর ২০০৬ সালে আন্দামান দ্বীপের দুই জেলে এই দ্বীপের কাছে মাছ ধরতে যায়। অত্যাধিক মদ পানের ফলে তারা ঘুমিয়ে পড়ে। এবং রাতের বেলায় তারা সমুদ্র স্রোতে ভেসে সেন্টিনাল দ্বীপে চলে যায়। এরপর দ্বীপের অধিবাসীরা দুই জেলেকে নৃশংষ ভাবে হত্যা করে। ভারতীয় কোস্ট গার্ড লাশ উদ্ধার করতে গেলে, তারা কোস্ট গার্ডের হেলিকপ্টার লক্ষ করে তীর ছুড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত লাশ উদ্ধার না করেই তারা ফিরে আসতে বাধ্য হয়। পরে ভারত সরকার এই দ্বীপের অধিবাসীদের বাইরের জগতের প্রভাব মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে এই দ্বীপের তিন কিলোমিটারের কাছাকাছি যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়।
Edited By: Farhana Zerin
যানজটে বিরক্ত হয়ে কুমিরে ভরা নদীতে ঝাঁপ!
যানজটে আটকাপড়ার অভিজ্ঞতা কমবেশি সবারই আছে। এই অবস্থা যে কতটা বিরক্তিকর, সেটা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন।
যানজটে বসে থাকতে কারোই ভালো লাগার কথা নয়। কিন্তু এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে ভালো না লাগলেও বসে থাকা ছাড়া তো আর উপায় নেই। চাইলেই গাড়ি নিয়ে উড়ে চলে যাওয়া যায় না, কিংবা গাড়ি রেখে হাঁটাও শুরু করা যায় না।
যানজটে আটকাপড়ে বিরক্ত হলেও বসেই থাকতে বাধ্য হন গাড়ির চালক আর যাত্রীরা। তবে যানজটে বিরক্ত হয়ে কেউ কুমিরে ভরা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে, এমনটি শুনেছেন কখনো? এমন নজির বোধহয় খুব একটা নেই।
বাস্তবে ঘটেছে এমনটি। ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে এ রকম একটি ঘটনার কথা জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার বাসিন্দা জিমি ইভান জেনিংস নামের ২৬ বছর বয়সী এক যুবক দুই ঘণ্টা ধরে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে সৃষ্ট হওয়া যানজটে আটকে ছিলেন।
এই যানজটে বসে থাকতে থাকতে তিনি চরম বিরক্ত হয়ে যান। শেষমেশ উপায়ন্তর না পেয়ে পাশের একটি নদীতে সাঁতার কাটার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ভাবেন কিছুক্ষণ সাঁতার কেটে আবার গাড়িতে ফিরে আসবেন।
কিন্তু নদীতে ঝাঁপ দেয়ার পরই বাঁধে বিপত্তি। সেখানে যে কুমির আছে তা জানতেন না ওই যুবক। তবে কপাল ভালো যে কুমির তাকে আক্রমণ না করলেও ঝাঁপ দেয়ার সাথে সাথে তলিয়ে যেতে থাকেন তিনি। একপর্যায়ে কোনোক্রমে ভেসে উঠে সাঁতার কেটে তীরে আসার চেষ্টা করেন।
পরে নিজের ফেসবুকে ওই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে পোস্ট করেন জিমি। সেখানে তিনি লেখেন, আমার জীবনের সেরা সময় কাটাচ্ছিলাম। সব কিছু আমার মনের মতোই চলছিল। আমি অনেককে আগেও নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখেছি। তবে ঝাঁপ দেয়ার পর মনে পড়েছিল এসব কেবল সিনেমাতেই দেখা যায়।
তিনি আরও লেখেন, ঝাঁপ দিয়ে পানিতে পড়ামাত্র আমার মুখে পানি ঢুকে যায়। আমি বাম হাতে ব্যথা পাই। সাঁতার কেটে তীরে আসার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু স্রোত অনেক তীব্র ছিল। দেড়ঘণ্টা পর আমি ক্লান্ত হয়ে যাই। আমার বাম হাত আসাড় হয়ে যায়। ডান হাত আর পা দিয়ে ভেসে ছিলাম। পুরোটা সময় জুড়েই প্রার্থনা করছিলাম। তবে শেষমেষ কোনরকমে তীরে এসে পৌঁছাতে সক্ষম হই।
তবে এভাবে নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলার অপরাধে হাতে হাতকড়া উঠেছে তার। পুলিশ গ্রেফতার করেছে জিমিকে।
এদিকে, এভাবে সাঁতার কাটার শখ একেবারেই ঘুঁচে গেছে জিমির। আর জীবনেরও সাঁতার কাটবেন না বলে ফেসবুক পোস্টে সে কথাও জানিয়েছেন।
Edited by: Farhana Zerin
কুসংস্কার, পশুপাখি ও মৃত্যু নিয়ে প্রচলিত কিছু ধারণা
মৃত্যুর খবর আগাম নাকি পশু পাখিরা বুঝতে পারে! এটা নতুন কিছু নয়। বহুকাল আগে থেকেই দেশে দেশে অনেকেই এই কথাটি বিশ্বাস করেন। পৃথিবীর বিভিন্ন ইতিহাসে এবং কল্পকাহিনীতেও এই ব্যাপারে লেখা রয়েছে। কিছু কিছু প্যারানর্মালজিষ্ট এই ব্যাপারে তাদের দৃঢ় বিশ্বাসের কথা বলেছেন। তাহলে আসুন আমরাও জেনে নেই কিভাবে বিভিন্ন দেশে কোন কোন পশুপাখির ক্ষেত্রে কি প্রচলিত আছে।
পেঁচা/সাদা পেঁচা
প্রাচীন প্রবাদে বলা হয়ে থাকে পেঁচা গান গাওয়া মানেই কারো মৃত্যু অতি সন্নিকটে। আসলে পেঁচার একটি বিশেষ ভঙ্গিমার ডাককেই এখানে গান বুঝানো হয়েছে। ক্যাথলিক সন্ন্যাসীরা পেঁচাকে দীর্ঘকাল ধরে “Devil’s Associate” হিসেবে বর্ণনা করে এসেছে।
ইউরোপে সাদা পেঁচা উড়ে বেড়ানোকে অনেকেই মৃত্যুর আগাম বার্তা বলে মনে করে থাকে। আসলে এমন ধারণার জন্য ইউরোপের দীর্ঘকালের উইচক্রাফট সংস্কৃতি দায়ী। সাদা পেঁচা উইচদের এ্যাসোসিয়েট হিসেবে প্রসিদ্ধ। তবে এই ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন জে কে রাওলিং। হ্যারি পটারের এ্যাসোসিয়েট হেডইউগ একটি সাদা পেঁচা যেটি আসলে অশুভ নয়!
কালো প্রজাপতি
কালো প্রজাপতি সম্পর্কেও একই রকমের ধারণা প্রচলিত রয়েছে। আসলে এটি এক প্রকার মথ। রাতজাগা এই মথকে অনেকেই দুঃসংবাদের দূত মনে করে থাকে। ইউরোপের অনেক সাহিত্যেই কালো রঙের পতঙ্গকে মৃত্যুর আরেক রূপে দেখা হয়। এমনকি আমাদের দেশে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অমর ছোটগল্প “মরণ ভোমরা”য় একটি কালো রঙের ভ্রমর ছিল মৃত্যুর দূত।
দক্ষিণ আমেরিকার মায়া অ অ্যাজটেক সভ্যতায় বাদুড়কে মৃত্যুদূত হিসেবে গণ্য করা হয়। বাদুড় খুবই রহস্যেঘেরা একটি প্রানী। ইউরোপের সংস্কৃতিতে বাদুড়ের অবস্থান ইহকাল ও পরকালের মাঝামাঝি একটি জায়গায়। বাদুড়ের ব্যাপারে আমাদের দেশেও বিভিন্ন ধরণের কল্পকাহিনীও কম নয়।
কালো ঘোড়া
ইউরোপে কালো ঘোড়ার ব্যাপারেও কুসংস্কার আছে। যদি কোথাও যেতে গেলে কোন কালো ঘোড়া কারো দিকে তাকিয়ে থাকে তাহলে বুঝতে হবে তাঁর মৃত্যু অনিবার্য।
মোরগ-মুরগী
পশ্চিমে এমন ধারণা আছে যদি কোন মোরগ কোন মুরগীর সাথে কথা বলে, তাহলে সেখানে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কারো মৃত্যু ঘটবে। তবে সেক্ষেত্রে নাকি অবিবাহিত নারীর মৃত্যুর শঙ্কাই বেশী। যদি দুটি মুরগী একটি মোরগের সাথে কথা বলে সেক্ষেত্রে কোন দম্পত্তির মৃত্যু আসন্ন আর যদি কোন মুরগী, মোরগের ডাক নকল করে তখন বুঝতে হবে, আশেপাশে মৃত্যু ঘোরাফেরা করছে!
কুকুর
কুকুরের কান্নাকে অশুভ কিছুর ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কুকুর নাকি কোন বিপদের গন্ধ পেলেই তার সুরে কান্না শুরু করে দেয়। এই বিশ্বাসটি আমাদের দেশে খুবই প্রচলিত।
শিয়াল
দিনের বেলায় যদি কারো বাসায় শিয়াল ধুকে পড়ে তাহলে সেই বাড়িতে মৃত্যু আসন্ন।
এই ধরণের বিভিন্ন ধরণের কুসংস্কার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অত্যন্ত প্রচলিত। মানুষ এগুলো বিশ্বাস করে এবং মেনে চলার চেষ্টা করে। এইসব কুসংস্কার নিয়ে বিভিন্ন দেশে অনেক সিনেমাও হয়েছে। অনেক সময় অনেক ঘটনা কাকতালীয় ভাবে মিলে যাওয়ার কারণে মানুষের মনে এসব ধারণা আরও গভীর হয়েছে। এসবে বিশ্বাস না করলেও, সাবধানের মাইর নাই। তাই চেষ্টা করা উচিত এগুলো এড়িয়ে চলা।
Edited By: Farahana Zerin
৫টি বই, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে বিক্রিত
পৃথিবীতে এমন কিছু জিনিস আছে, যা কখনোই মূল্য দিয়ে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তেমনই একটি জিনিস হলো বই। বইয়ের পাতার প্রতিটি বাক্যের ভেতরে লুকিয়ে থাকা জ্ঞানকে আর যা-ই হোক, টাকার অঙ্কে পরিমাপ করা সম্ভব নয়। এতোকিছুর পরেও বেশ কিছু বই রয়েছে– যেগুলোর নামের পেছনে লেগে আছে ইতিহাসের গন্ধ, বিরলতা কিংবা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আর এসব কারণেই সেই বইগুলোর মালিকানা পেতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেনি বইপ্রেমীরা। ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া সেই বইগুলোর উপাখ্যানই তুলে ধরা হলো আজকের এই ভিডিওতে।
কোডেক্স লেস্টার
মানব ইতিহাসে শিল্প আর বিজ্ঞান উভয় জগতেরই এক অসামান্য প্রতিভা লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির হাতে লেখা ৩০টি নোটবুকের একটি হলো কোডেক্স লেস্টার। এই কোডেক্সটিকেই ভিঞ্চির সবচেয়ে মূল্যবান নোটবুক হিসেবে ধরা হয়। ১৫০৬ থেকে ১৫১০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে লেখা ৭২ পৃষ্ঠার এই নোটবুকটিতে দ্য ভিঞ্চি আলোকপাত করেছেন সূর্য, চাঁদ এবং পৃথিবীর সম্পর্কের ওপর। সাথে রয়েছে জোয়ার-ভাটাসহ বিভিন্ন ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।
কোডেক্সটি লেখাও হয়েছে ভিঞ্চির বিখ্যাত মিরর-ইমেজ রীতিতে, অর্থাৎ নোটবুকটির লেখা পড়া যাবে কেবল আয়নায় ধরার পর।
ভিঞ্চির মৃত্যুর পর নোটবুকটি হাতে পান বিখ্যাত ভাস্কর মাইকেল এঞ্জেলোর ছাত্র জিওভান্নি দেল্লা পোর্তা। এরপর লেস্টারের প্রথম আর্ল থমাস কোক ১৭১৯ সালে কিনে নেন এই নোটবুকটি এবং তার নামানুসারেই বইটির নাম হয় কোডেক্স লেস্টার। ১৯৮০ সালে বিখ্যাত সংগ্রাহক আরমান্ড হ্যামার লেস্টার এস্টেট থেকে ৫.১ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে বইটি কিনে নেন এবং ড. পেদরেত্তির হাতে দায়িত্ব দেন এটিকে ইংরেজি ভাষায় রুপান্তরের জন্য।
১৯৯৪ সালে ক্রিস্টির নিলামে বইটি ওঠানো হয় এবং সেখান থেকেই ৩০.৮ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে বইটিকে নিজের মালিকানাধীন করে নেন বিল গেটস। তবে তিনি কেবল নিজের বুক-শেলভেই বইটিকে আটকে রাখেননি। পৃথিবীর আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন জাদুঘর কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে এটির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছেন। বইটির ডিজিটাল প্রিন্টও পাওয়া যাবে ব্রিটিশ লাইব্রেরির ওয়েবসাইটে। বইটির বর্তমান বাজার মূল্য ৪৯.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ম্যাগনাকার্টা
১২১৫ সালের ১৫ জুন উইন্ডসরের কাছের এক দ্বীপে ইংল্যান্ডের রাজা জনকে ম্যাগনাকার্টায় সই করতে বাধ্য করেন ব্যারনরা এবং এভাবেই সূচনা ঘটে নতুন এক দিগন্তের। এর ফলে স্বয়ং রাজাও আইনের অধীনস্ত হয়ে পড়েন, ৪৯ ধারার এই লিখিত চুক্তিতে মোহর মেরে ব্যারনদের অধিকার মেনে নেন রাজা। কিন্তু এরপরেও বেশ কয়েকবার ম্যাগনাকার্টাকে অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যার ফলে ব্যারনদের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে রাজারা এবং এরপর আবারও ম্যাগনাকার্টাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
২০০৭ সালের নিলামে যে ‘ম্যাগনাকার্টা’ দলিলটিকে ২১.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে বিক্রি করা হয়, সেটি মূল ম্যাগনাকার্টার কপি হিসেবে ভাবাটা ভুল। এমনকি ১২৯৭ সালের এই কপিটিকে ‘কপি’ বললেও ভুল হবে, বরং নকলের নকলের নকল এবং একইসাথে ‘আসল’ও বটে! রাজা প্রথম এডওয়ার্ডের ইস্যু করা অনেকগুলো কপি ম্যাগনাকার্টার মধ্যে এটি একটি। এরকম আরও অসংখ্য ম্যাগনাকার্টা ছড়িয়ে রয়েছে ব্রিটেনের লাইব্রেরিতে, যার বেশিরভাগেরই অন্তিম পরিণতি হয়েছে ইঁদুরের পেট, বাকিগুলো হয়ত আগুনে পুড়েছে, কোনোটি একেবারে নষ্টই হয়ে গেছে সময়ের ভারে জর্জরিত হয়ে।
১৯৮৪ সালে প্যারট ফাউন্ডেশনের মালিক রস প্যারট ১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ইংল্যান্ডের ব্রুডনেল পরিবারের কাছ থেকে ১৫X১৭ ইঞ্চির ভেড়ার চামড়া দিয়ে বানানো এই পার্চমেন্টটিকে কিনে নেন। ২৩ বছর পর ৮০০ বছরের পুরনো এই মূল্যবান পার্চমেন্টটিকে বিক্রি করা হয় ১৪ গুণ লাভের বিনিময়ে! এর বর্তমান বাজার মূল্য ২৪.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সেইন্ট কাথবার্ট গসপেল
১৩ শো বছর আগের ইউরোপের প্রাচীনতম এবং একইসাথে অক্ষত ‘সেইন্ট কাথবার্ট গসপেল’ বইটি কেনার জন্য ব্রিটিশ লাইব্রেরিকে খরচ করতে হয়েছে ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার!
বইটি দেখার পর ব্রিটিশ লাইব্রেরির মধ্যযুগীয় ম্যানুস্ক্রিপ্টগুলোর দায়িত্বে থাকা কিউরেটর ক্লেয়ার ব্রে মন্তব্য করেছিলেন, সুদৃশ্য অ্যাংলো-স্যাক্সন কারুকাজে সজ্জিত লাল চামড়া দিয়ে মোড়ানো এই বইটি দেখে মনেই হবে না, এটি আজ থেকে ১৩ শো বছর আগের; বরং দেখে মনে হতে পারে, এটি সপ্তদশ শতাব্দীর। আর এর লেখাটাও দেখে মনে হচ্ছে, গতকালই লেখা হয়েছে!
সেইন্ট কাথবার্ট ছিলেন সপ্তম শতাব্দীর ব্রিটেনের অন্যতম প্রধান ধর্মযাজক। মধ্যযুগীয় ব্রিটিশদের প্যাগানিজম থেকে খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত করতে বেশ বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন এই সেইন্ট। সেইন্ট কাথবার্ট সপ্তম শতাব্দীর শেষ দিকে মারা যাওয়ার পর তার কফিনেই রেখে দেওয়া হয় এই মূল্যবান বইটি। পরবর্তীতে ভাইকিংরা ইংল্যান্ড আক্রমণ করার সময় তারা সেইন্ট কাথবার্টের কফিনটিও সাথে নিয়ে যায়। ১১০৪ সালের দিকে সেইন্ট কাথবার্টের নামে গীর্জা স্থাপনের সময় তার কফিন খোলা হলে গসপেলটি আবিষ্কৃত হয়।
সপ্তদশ শতাব্দীতে বইটি স্থানান্তরিত করা হয় বেলজিয়ামের যাজক সম্প্রদায়ের কাছে। তারপর সেখানেই ২৫০ বছর থাকার পর অবশেষে বইটি কিনে নেয় ব্রিটিশ লাইব্রেরি; বিনিময়ে খরচ করতে হয় ১৪.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর বর্তমান বাজার মূল্য ১৪.৯ মার্কিন ডলার।
বে সম বুক
আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে ‘নিউ ওয়ার্ল্ডে’র ম্যাসাচুসেটসে যখন ব্রিটিশরা তাদের উপনিবেশ গড়ে তুললো, তখন ‘নতুন পৃথিবী’র বুকে তারা তাদের ধর্ম ছড়িয়ে দিবে সেটাই স্বাভাবিক ছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ম্যাসাচুসেটসের বে কলোনিতে গড়ে তোলা হলো গির্জা।
গির্জার প্রার্থনাসঙ্গীত সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কী করা যেতে পারে, তা ভাবতে ভাবতেই তাদের কাছে পৌঁছে গেল গুটেনবার্গের আবিস্কৃত প্রিন্টিং মেশিন। এভাবেই ১৬৪০ সালে আমেরিকার বুকে ছাপানো হলো প্রথম বই। গির্জার প্রার্থনাসঙ্গীতে ভরপুর বইটির নাম হলো বে সম বুক।
বে সম বুকের মাত্র ১১টি কপিই এখনও পৃথিবীতে টিকে রয়েছে, যার মধ্যে একটি ডেভিড রুবেনস্টাইন নামক এক মার্কিন ব্যবসায়ী বোস্টনের ওল্ড সাউথ চার্চ থেকে কিনে নিয়েছেন ১৪.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে।
রথসচাইল্ড প্রেয়ারবুক
পৃথিবীর ইতিহাসের আরেকটি মহামূল্যবান বই, ‘দ্য রথসচাইল্ড প্রেয়ারবুক ‘তৈরি হয়েছিল বেলজিয়ামের ব্রুগেস শহরে, সম্ভবত ইউরোপের কোনো এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের জন্য। ১৫০০ থেকে ১৫২০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে তৈরি হওয়া এই বই ‘বুক অভ আওয়ার্স’-এর সবচেয়ে মূল্যবান বইগুলোর একটি, যেগুলো মূলত মধ্যযুগের খ্রিস্টধর্মীয় প্রার্থনা বই।
বিখ্যাত সব চিত্রকরের ছবির পাশাপাশি এতে স্থান পেয়েছে প্রার্থনা, প্রার্থনাসঙ্গীত এবং ধর্মীয় উপদেশ। সোনা দিয়ে লাইনিং করা, পশুর চামড়া দিয়ে বানানো এবং মিনিয়েচার ছবি দিয়ে ভরপুর এই বইটির প্রতিটি পৃষ্ঠাই একেকটি মাস্টারপিস।
১৫০০ সালের দিকে তৈরি হলেও, এর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, যখন নাৎসি বাহিনী অস্ট্রিয়া দখলের সময় নাথানিয়েল রথসচাইল্ডের মালিকানাধীন এই বইটি লুট করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৪২ সালে একটি লবণ খনি থেকে বইটি উদ্ধার করে অস্ট্রিয়ার জাতীয় জাদুঘরে রেখে দেওয়া হয়। ২০১৪ সালে বইটিকে নিলামে তোলা হলে কেরি স্টোকস নামক এক অস্ট্রেলীয় ব্যবসায়ী ১৩.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে বইটি কিনে নেন।বর্তমান এর বাজার মূল্য: ১৯.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে এটি অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
Edited By: Farhana Zerin
আমো হাজি, পৃথিবীর সবচেয়ে নোংরা মানুষ
স্নান বা গোসল না করে কতদিন থাকা যায়? একদিন? দুইদিন? তিনদিন? কেউ কেউ হয়তো কয়েকদিন গোসল না করে থাকতে পারেন। তাই বলে এক টানা ৬৭ বছর!
পেরিয়ে গেছে ছ’দশকেরও বেশি সময়। তবুও তাঁর ত্বক ছুঁতে পারেনি এক ফোঁটা জল। হ্যাঁ, স্নান না করেই, ধুলো-বালি মেখে অপরিষ্কার থাকতেই পছন্দ করেন ইরানের বাসিন্দা আমো হাজি।
সর্বপ্রথম‘তেহরান টাইমস’ সংবাদপত্র তাঁর কথা প্রকাশ্যে আনে। আর প্রায় ৬৭ বছর স্নান করার প্রতি তাঁর এই চূড়ান্ত অনীহার কারণেই তাঁকে অভিহিত করা হয় বিশ্বের সবথেকে নোংরা মানুষ হিসাবে।
বর্তমানে তার বয়স ৮৭ বছর। সমাজ ও পরিবারহীন হয়েই বিগত ৬৭ বছর একাকী বসবাস করছেন তিনি।
দীর্ঘ দিন গোসল না করার কারণ, তিনি পানি দেখলেই ভয় পান। তার মতে, গোসল করলেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। ফলে গোসল না করতে করতে আমু হাজির পুরো শরীরে ময়লা জমে গেছে।
আমো হাজির খাদ্যাভাসও অদ্ভুত। সজারুর মাংস তাঁর খুব পছন্দের। পঁচা মাংস খেতে ভালবাসেন। তবে নিয়ম করে প্রতিদিন ৫ লিটার পানিও পান করেন তিনি।
একসঙ্গে পাঁচটি সিগারেট জ্বালিয়ে টান দেন। পশুদের শুকনো মল জ্বালিয়ে পুরনো পাইপের মাধ্যমে টান দেন। এতেই নাকি তাঁর চরম সুখ! ধুমপানের ব্যাপারে নাকি তিনি দারুন শৌখিন।
আরেকটি মজার বিষয় হলো, তিনি চুল না কেটে সেগুলো আগুনে পুড়িয়ে ছাঁটাই করেন।
কমবয়সে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে মানসিভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন আমো হাজি। যার ফলে তিনি সমাজ ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনযাপনের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর থেকে তিনি ভবঘুরের মতোই দিন কাটাচ্ছেন।
তার কোনো ঘর নেই, দক্ষিণ ইরানের দেজগাহ গ্রামের আশেপাশে ঘুরে বেড়ান। এ গ্রামের বাইরের এক মরুভূমিতে গর্ত তৈরি করে সেখানেই থাকেন আমো।
যদিও গ্রামবাসীরা তার জন্য একটি কুঁড়েঘর তৈরি করে দিয়েছিলেন, তবে তিনি সেখানে থাকেননি। স্থানীয়রা বলছেন, তারা প্রায়ই আমু হাজিকে দূর থেকে দেখে একটি পাথর ভেবে ভুল করেন।
Edited By: Farhana Zerin
ঢিলেঢালা স্বাস্থ্যবিধি, স্কুল ছুটির পর
বেলা ১১টা ২০ মিনিট। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাতি শাখার ছুটি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা একে একে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেরিয়ে আসছে। কিন্তু স্কুলের মূল ফটকের সামনেই অভিভাবকদের জটলা আর গাদাগাদি। স্কুল ছুটির পর দেখা যাচ্ছে ঢিলেঢালা স্বাস্থ্যবিধি।
অভিভাবকদের একটা অংশের এই গাদাগাদি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্য অভিভাবকেরা। তাঁরা বলছেন, স্কুলে পাঠাতে ও স্কুলের ভেতরে যে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে, স্কুলের বাইরে বেরোলেই তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে।
এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে আসতে এবং স্কুল ছুটির পর বাসায় পৌঁছাতে অভিভাবকদের আরও সচেতন হতে হবে।
দীর্ঘ দেড় বছর পর সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে গতকাল রোববার। আজ সোমবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দ্বিতীয় দিন। রাজধানীর মতিঝিল, আরামবাগ ও শাজাহানপুরে ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে ঢোকানো হচ্ছে। স্কুল প্রাঙ্গণে অযথা কোনো শিক্ষার্থীকে ঘুরতে দেওয়া হচ্ছে না। শ্রেণিকক্ষগুলোতেও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক নিশ্চিত করছেন শিক্ষকেরা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীরাও মাস্ক ব্যবহার করছেন। তবে স্কুল ছুটির পর শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে গেলে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে দেখা যাচ্ছে না।
গোড়ানের বাসিন্দা সেলিম খানের দুই সন্তান পড়ছে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। একজন অষ্টমে, অন্যজন ষষ্ঠ শ্রেণিতে। সন্তানদের বাসায় নিয়ে যেতে তিনি স্কুলের মূল ফটকের চট্টলা থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, স্কুল ছুটির পর শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে বের হচ্ছে। কিন্তু গেটের সামনে অভিভাবকেরা গাদাগাদি করে আছেন। অভিভাবকেরা যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানেন, তাহলে বিপদ হতে পারে। অভিভাবকদের এ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া উচিত।
আরেক অভিভাবক শামসুল আলমের মেয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ছে। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকার সঠিক নিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কিন্তু অভিভাবকদের এ ধরনের জটলা করার কোনো প্রয়োজন নেই। স্কুল কর্তৃপক্ষ ছুটির সময় মাইকিং করলে ভালো হতো।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, গতকাল স্কুল শুরুর প্রথম দিনে গড় উপস্থিতি ছিল ৭৫ শতাংশ। আজ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ৭৪ শতাংশ। স্কুলে ঢোকার সময় তাপমাত্রা মাপা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং দূরত্ব রেখে আসনে বসানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। আজ তৃতীয়, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও দশম শ্রেণির ক্লাস হচ্ছে।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, স্কুলে এসে কোনো বাচ্চার শরীরে তাপমাত্রা বেশি বা অসুস্থ হয়েছে—এমনটি গত দুদিনে পাওয়া যায়নি। অসুস্থ থাকলে অভিভাবকেরাই ফোন দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছে। স্কুল শুরুর আগে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। তবে স্কুল ছুটির পর মূল ফটকের সামনে অভিভাবকদের জটলা থাকছে। রশি টেনে শিক্ষার্থীদের বের করা হচ্ছে। বিএনসিসি সদস্য, নিরাপত্তাকর্মী ও স্কুলের কর্মীরা এসব দায়িত্ব পালন করছেন।
স্কুল ছুটির পর একই চিত্র দেখা গেল মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয় ও নটর ডেম কলেজে।
মাস্ক খুলে ফেলছে শিক্ষার্থীরা
মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তামান্না হক বলেন, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে খুব ভালো মনোযোগ দিচ্ছে। দীর্ঘ বিরতির পর ক্লাস শুরু হয়েছে বলে তাদের পড়ার চাপ কম দেওয়া হচ্ছে। কোন কোন শিক্ষার্থী কিছুক্ষণ দম নেওয়ার জন্য মাস্ক খুলে ফেলছে। বলছে অস্বস্তি লাগে। আমরা তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজ দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস ছিল। দ্বিতীয় শ্রেণিতে মোট শিক্ষার্থী ২৩৩। তবে উপস্থিত ছিল ১৩২ জন। আর পঞ্চম শ্রেণিতে মোট শিক্ষার্থী ২৪৭, উপস্থিত ছিল ১৩৯ জন।
অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরজাহান হামিদা বলেন, অনেক শিক্ষার্থীই পরিবারের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে আছে। খুব কম শিক্ষার্থী অসুস্থ বলে আসতে পারছে না। গত দুদিন এই স্কুলে এসে অসুস্থ হয়েছে, এমন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি।
নটর ডেম কলেজে দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, সকালের পালার ক্লাস শেষে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে আসছে। তবে তাদের অনেকের মুখের মাস্ক থুতনিতে নামানো। কারও কারও মুখে কোনো মাস্ক নেই। অথচ সকালে কলেজে ঢোকার সময় কাউকে মাস্ক ছাড়া ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
নটর ডেম কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য মাস্ক ছাড়া কলেজে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। দুপুর ১২টার দিকে কলেজের মূল ফটকের সামনে গিয়ে দেখা যায়, দুপুরের পালার শিক্ষার্থীরা কলেজে ঢুকছে। ভেতরে ঢোকার সময় প্রত্যেককে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে। এরপর থার্মাল যন্ত্রে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। তারপর শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের দিকে চলে যাচ্ছে।
নটর ডেম কলেজের ছাত্র পরিচালক ফাদার অ্যান্থনি সুশান্ত গোমেজ বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানানোর বিষয়টিতে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। কলেজ প্রাঙ্গণে ভেতরে কোনো শিক্ষার্থী মুখের মাস্ক নামিয়ে নিলে আমাদের কর্মকর্তারা তাদের সতর্ক করে দিচ্ছে। তবু কোনো কোনো শিক্ষার্থী মাস্ক না পরে ঘোরাফেরা করার চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘ মানবিক সংকট এড়াতে আফগানিস্তানে চাইছে ৬০০ মিলিয়ন ডলার
আফগানিস্তানে মানবিক সংকট এড়াতে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা চায় জাতিসংঘ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
সহায়তার লক্ষ্যে আজ সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি আগেই সতর্ক করে বলেছে, আফগানিস্তান তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
গত ১৫ আগস্ট তালেবানের কাছে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন হয়। এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের হাতে যায়। তারা ইতিমধ্যে দেশটিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছে।
আফগানিস্তান তালেবানের দখলে যাওয়ার আগে থেকেই দেশটির ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিল, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, খরা, নগদ অর্থের স্বল্পতা ও খাদ্যের অভাবের কারণে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকারের পতনের আগে দেশটি কয়েক শ কোটি ডলার বিদেশি সহায়তা পেয়ে আসছিল। কিন্তু তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর সেই সহায়তা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচির ওপর চাপ বেড়েছে।
গত শুক্রবার আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর সংস্থা বর্তমানে আর্থিক সংকটে রয়েছে। অর্থের অভাবে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের কর্মীদের বেতন পর্যন্ত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয় সময় আজ সোমবার বিকেলে জেনেভায় যে বৈঠক হবে, সেখানে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রসের প্রধান পিটার ম্যুয়েরার, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাসসহ কয়েকটি দেশের সরকারের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা চাওয়া হয়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশ খরচ করা হবে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিতে।
আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ১ হাজার ৬০০ আফগানের ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করে ডব্লিউএফপি। এই জরিপে দেখা যায়, ৯৩ শতাংশ আফগান পর্যাপ্ত খাবার পায় না। কারণ, দেশটির বেশির ভাগ মানুষের কাছে খাবার কেনার মতো অর্থ নেই।
ডব্লিউএফপির আঞ্চলিক উপপরিচালক অ্যানথিয়া ওয়েব বলেন, আফগানদের জীবন বাঁচাতে তাদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দিতে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। দেশটিতে খাবারের মজুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। এই সংকট এড়াতে তাঁরা আক্ষরিক অর্থেই সহায়তা প্রার্থনা করছেন। তাঁরা ঋণ নিচ্ছেন।
কুপিয়ে হত্যা দুই ভাবিকে, দেবরের ফাঁসি
সিলেটের গোয়াইনঘাটে দুই ভাবিকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে দেবরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন মখলিছ মিয়া ওরফে মখন । তিনি গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম পান্তুমাই গ্রামের বাসিন্দা।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নিজাম উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, মখলিছ মিয়ার মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও দুই ভাবিকে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার অপর আসামি মখলিছের স্ত্রী রাহেলা বেগমকে তিন বছরের কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা কাঠগড়ায় ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা গেছে , ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল গোয়াইনঘাটের পান্তুমাই এলাকার পিয়াইন নদের তীরে মুর্তা বাগানের মালিকানা নিয়ে একই গ্রামের জমসু মিয়ার স্ত্রী মালেকা বেগম ও আজির উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা বেগমের সঙ্গে বচসা হয় মখলিছের। হাসিনা ও মালেকা মখলিছের চাচাতো দুই ভাইয়ের দুই স্ত্রী ছিলেন। ঝগড়ার একপর্যায়ে মখলিছ দা দিয়ে কুপিয়ে হাসিনা ও মালেকাকে হত্যা করেন। হত্যার পর মখলিছের স্ত্রী রাহেলা বেগম দুজনের লাশ মাটিতে পুঁতে রাখার চেষ্টা করেন। বিষয়টি দেখে ফেলে গ্রামবাসী তাঁদের আটক করে পুলিশে দেন।
এ ঘটনায় হাসিনা বেগমের ছেলে আবদুস সবুর প্রতিপক্ষ মখলিছ, রাহেলাসহ চারজনকে আসামি করে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে গোয়াইনঘাট থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক মশিউর রহমান ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল মখলিছ ও তাঁর স্ত্রী রাহেলাকে বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। আদালতের বিচারক ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ এই রায় দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশকে ছুরি দেখিয়ে পালালেন তরুণ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এক তরুণ পুলিশকে ছুরি দেখিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
ওই তরুণের নাম রুবেল মিয়া। তাঁর বয়স আনুমানিক ২৪ বছর। তিনি সিলেট জেলা সদরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। ওই যুবক মাদকাসক্ত বলে দাবি করছে পুলিশ।
রেলওয়ে পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে রক্তাক্ত অবস্থায় রেলস্টেশনে পড়ে ছিলেন রুবেল। এই দৃশ্য দেখে রেলওয়ে ফাঁড়ির দুই পুলিশ সদস্য রুবেলকে হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রুবেলকে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তির নির্দেশ দেন।
এরপর রাত সাড়ে নয়টার দিকে ভর্তির কাগজ সার্জারি ওয়ার্ডে জমা দেওয়ার সময় ওই তরুণ ছুরি নিয়ে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় এক পুলিশ সদস্য দৌড়ে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে ফটকের কলাপসিবল গেট লাগিয়ে দেন।
পরে ওই তরুণ ওয়ার্ডের ভেতরে থাকা অপর পুলিশ সদস্যকে ছুরি ধরে মারধর করার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে দায়িত্বরত আরেক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই গেট খুলে দেন। এ সুযোগে ওই তরুণ দৌড়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সালাউদ্দিন খান জানান, স্টেশন এলাকায় আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ওই তরুণকে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে কৌশলে ওই তরুণ পালিয়ে গেছেন। ওই তরুণ মাদকাসক্ত ছিলেন।
বছিলায় আটক জঙ্গি দলের সদস্য ব্যক্তি ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার
রাজধানীর বছিলায় একটি বাসা থেকে এমদাদ ওরফে উজ্জ্বল মাস্টার নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে র্যাব। সম্প্রতি ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার হন চারজন জঙ্গি। আটক এমদাদ ওই দলেরই একজন সদস্য বলে র্যাব জানিয়েছে। ওই বাসা থেকে একটি পিস্তল, বিস্ফোরক ও তিন লাখ টাকা উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র্যাব।
গতকাল বুধবার গভীর রাতে বছিলার ওই চারতলা ওই বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। বাসাটি র্যাব ২ নম্বর কার্যালয়ের কাছে। কার্যালয় থেকে ওই বাসায় হেঁটে যেতে ৫ থেকে ৭ মিনিট সময় লাগে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি ময়মনসিংহ থেকে চারজন জঙ্গি গ্রেপ্তার হন। ওই দলেরই একজন সদস্য উজ্জ্বল মাস্টার। চলতি মাসের ২ তারিখ তিনি বছিলার এই বাসায় ওঠেন। নিজেকে তিনি প্রিন্টিং প্রেসের কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। স্ত্রীকে আনার কথা বললেও আনেননি। জাতীয় পরিচয়পত্রও জমা দেননি।
র্যাব আরও বলেছে, চারতলা ভবনের দোতলার যে ফ্ল্যাটে উজ্জ্বল মাস্টার ছিলেন, সেখানে তাঁর আরও দুই সহযোগী ছিলেন। তাঁরা গতকাল চলে গেছেন।
চারতলা ওই ভবনটি র্যাব সদস্যরা পাহারা দিচ্ছেন। ভবনের ভেতরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ওই ভবনের দারোয়ান মহিউদ্দীন বলেন, এমদাদ ওরফে উজ্জ্বল মাস্টারের সঙ্গে আরেকজন ছিলেন। তিনি গতকাল চলে যান। পরে আরেকজন এসেছিলেন।
তিনি বলেন, এমদাদ নিজেকে প্রিন্টিং প্রেসের মালিক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে থাকা দুজন প্রেসের কর্মী বলেও জানিয়েছিলেন।প্রতিদিন সকালে একটি পানির বোতল আর পলিথিনের ব্যাগ হাতে বেরোতেন। আজ স্ত্রীকে বাড়ি থেকে আনার কথা বলেছিলেন। বাড়ি নওগাঁ বলে শুনেছেন। তিনি সন্দেহজনক কোনো কিছু দেখেননি।
গত শনিবার ময়মনসিংহ শহরতলির খাকডহর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের চার সদস্যকে আটক করে র্যাব। র্যাব জানায়, জেএমবির ওই চার সদস্য মূলত ডাকাতিসহ অন্যান্য উপায়ে লুটতরাজ করে দলের জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজ করতেন। তাঁরা চারজন মিলে ময়মনসিংহে বড় ধরনের প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি করে ময়মনসিংহের একজন ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করার জন্য নৌকায় করে ময়মনসিংহে এসেছিলেন।
আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে গুলিভর্তি একটি বিদেশি রিভলবার, একটি ম্যাগাজিন, তিনটি গুলি, তিনটি চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র, আটটি বোমাসদৃশ বস্তু, দরজা ও লক ভাঙার বিভিন্ন সরঞ্জামাদি এবং একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা জব্দ করে র্যাব।
তদন্ত কমিটি গঠন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের এক স্কুলের ৫০ ছাত্রীর বাল্যবিবাহের ঘটনা খতিয়ে দেখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই স্কুলসহ ইউনিয়নের বাকি তিনটি স্কুলেরও শিক্ষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাল্যবিবাহ হওয়া এবং বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকা ছাত্রীদের চিহ্নিত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ইউপি কার্যালয়ে চারটি স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক এবং আলীপুর ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। কাল বৃহস্পতিবার ইউনিয়নের চার স্কুলের শিক্ষক, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৈঠক ডেকেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যানরা এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সাতক্ষীরার এক স্কুলেই ৫০ বাল্যবিবাহ শিরোনামের সংবাদ প্রকাশের পর এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আলীপুর ইউনিয়নের আলীপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামের স্কুলটির ৬৬ ছাত্রীর এ বছর বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জনের বাল্যবিবাহ হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর ইউএনও ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, সংবাদপত্রে একটি স্কুলের এতসংখ্যক ছাত্রীর বাল্যবিবাহের ঘটনা প্রকাশের পর এ নিয়ে করণীয় ঠিক করতে এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য সুপারিশ তুলে ধরতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গতকাল গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব এবং উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়েছে।
ইউএনও বলেন, আমি আজ ওই স্কুলসহ পাশের আরেকটি স্কুল পরিদর্শন করে শিক্ষকদের সঙ্গে দুই দফায় বৈঠক করেছি। আগামী শনিবার স্কুলটিতে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে শিক্ষক, অভিভাবক, ছাত্রী এবং বেসরকারি সংগঠনের কর্মীদের অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া বাল্যবিবাহ হওয়ার আগেই যেন তথ্য পাওয়া যায়, সে জন্য স্বেচ্ছাসেবক দলকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আলীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুর রউফ বলেন, ওই স্কুলসহ অন্য স্কুলের শিক্ষকদের বলা হয়েছে, ছাত্রীদের মধ্যে কাদের বাল্যবিবাহ হয়েছে এবং কারা ঝুঁকিতে আছে, সেই তালিকা করে জমা দিতে। তিনি বলেন, বাল্যবিবাহের শিকার মেয়েদের অভিভাবককে ডাকব। তারা কেন এই কাজ করল? সাজা হয় না দেখে ওদের মধ্যে কোনো ভয় কাজ করে না। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, মেয়েগুলোর যে পড়াশোনা হবে না, সে জন্য আমাদেরই কষ্ট বেশি। নিজের ভালো যদি কেউ না বোঝে, তাহলে আপনি-আমি আর কতটুকু করতে পারব!
সংবাদ প্রকাশের পর আলীপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে আরেকটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও তালিকা করা শুরু হয়েছে বলে জেলার বিভিন্ন পেশাজীবীকে নিয়ে গড়া বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির প্রশাসনিক প্রধান মো. সাকিবুর রহমান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ওই শিক্ষকদের সাতটি দলে ভাগ করে ছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি দলের কাছে জানতে পেরেছেন, তাঁরা সাতটি বাল্যবিবাহ শনাক্ত করেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এই স্কুলেও বাল্যবিবাহের সংখ্যা ৪০-৫০ হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ কাল ইউনিয়ন পরিষদে তাদের তথ্য জমা দেবে। ওই ইউনিয়নের বাকি দুটি স্কুল হচ্ছে মাহমুদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাহমুদপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়।
জামিনের পর আসামিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা, আহত ৩
মৌলভীবাজারে এক আসামির জামিনের পর বাদীপক্ষের ক্ষিপ্ত লোকজন আসামিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় তিনজন আহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মৌলভীবাজার আদালত এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের মছকন্দর মিয়া, মুনিম খান ও মো. শাহরিয়ার। তাঁদের মধ্যে মছকন্দর মিয়াকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপর দুজনকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ, আসামিপক্ষের আইনজীবী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কমলগঞ্জের রহিমপুর ইউনিয়নের বড়চেক এলাকায় জমিজমা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে মামলা ছিল। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একটি মামলার ৫ নম্বর আসামি বড়চেক গ্রামের মশাহিদ আলীকে গ্রেপ্তার করে কমলগঞ্জ থানা-পুলিশ। এই মামলার বাদী একই এলাকার হারুনুর রশীদ। এদিকে পুলিশ গ্রেপ্তার মশাহিদ আলীকে আজ আদালতে সোপর্দ করে। এরপর গ্রেপ্তার ব্যক্তির পক্ষে তাঁর আইনজীবী কমলগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।
আসামির জামিনের পরপরই বাদীপক্ষের ৮ থেকে ১০ জন লোক আদালতের বাইরে অবস্থান করা আসামির আত্মীয়স্বজন এবং তাঁর পক্ষের লোকজনের ওপর দা, চাকু নিয়ে হামলা করেন। তাঁরা তখন আদালত এলাকায় পৌর জনমিলন কেন্দ্রে প্রবেশমুখের দক্ষিণ পাশে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে। হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। ঘটনার সময় জামিন পাওয়া আসামি কোর্টহাজতেই ছিলেন। এই ঘটনার পর বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, গতকাল রাতে আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ আদালতে তাঁর জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনের কথা শোনার পরই বাদীপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আসামির আত্মীয়স্বজনের ওপর হামলা করেছেন। এতে তিনজন আহত হয়েছেন। তাঁদের একজনকে সিলেট পাঠানো হয়েছে।
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইয়াছিনুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কমলগঞ্জের একটি মামলার ঘটনায় একপক্ষ আরেক পক্ষের ওপর হামলা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ সময় হামলাকারীরা পালিয়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীদের একটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দেখা মিলল বিরল উল্টোলেজি বানরের
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে সম্প্রতি দেখা মিলল বিরল উল্টোলেজি বানরের। স্থানীয়ভাবে এটি কেশরওয়ালা সিংহ বানর, কুলু বান্দর, ছোট লেজি বানর, উলু বান্দর প্রভৃতি নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের তালিকায় এই বানরকে সংকটাপন্ন বলা হয়েছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে এরা সংরক্ষিত প্রাণী।
অন্য বানরের লেজ নিচের দিকে নোয়ানো থাকলেও উল্টোলেজি বানরের সোনালি রঙের লেজটি নিচের দিকে একটু উঁচু হয়ে ঝুলে থাকে। এ প্রজাতির বানর সচরাচর দেখা যায় না। তাদের গায়ের রং হালকা সোনালি থেকে বাদামি। তবে ওপরের অংশ জলপাই ও ধূসর আর নিচের দিক ধূসর সাদা। মাথার মাঝখানটা চ্যাপ্টা ও কালচে রঙের। বয়স্ক বানরের মাথায় কখনো কখনো কেশর দেখা যায়। ১৬২ থেকে ১৮৬ দিন পর স্ত্রী বানর একটি বাচ্চা দেয়। এদের গড় আয়ু ১০ থেকে ১২ বছর। এই প্রজাতির বানর গভীর সবুজ বনে বাস করে। এরা ফলমূল ও কচিপাতা খায়। দল বেঁধে হানা দেয় শস্যখেতে।
বানরের এই প্রজাতি সম্পর্কে প্রকৃতিপ্রেমী রুহুল ইসলাম বলেন, এই বানরকে ইংরেজিতে বলে Northern pig-tailed macaque। কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ছাড়াও হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও রেমা-কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যে এই প্রজাতির বানর দেখা যায়। পুরুষ, স্ত্রী ও বাচ্চা মিলে ২০ থেকে ২৫টি বানর দল বেঁধে বাস করে।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, অতিসংকটাপন্ন উল্টোলেজি বানরের ছোট–বড় মিলিয়ে একটি দল এখানে বাস করছে। অতিবিপন্ন ও সংকটাপন্ন বলে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এদের প্রতি সতর্কতার সঙ্গে নজরদারি করছে।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান–এমডিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আবেদন
কলেজছাত্রী মোসারাত জাহানকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা সায়েম সোবহান আনভীরসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ আদালতে মোসারাতের বোন নুসরাত জাহান মামলা নেওয়ার জন্য আজ সোমবার এই আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর রেজাউল করিম।
মামলায় আহমেদ আকবর সোবহানের স্ত্রী আফরোজা সোবহান, আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা, শারমিন, সাইফা রহমান মিম, কথিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা এবং ইব্রাহিম আহমেদ রিপনকে আসামি করার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
পিপি রেজাউল করিম বলেন, কলেজছাত্রী মোসারাত জাহানকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ , দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন বাদী নুসরাত জাহান।
রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গত ২৬ এপ্রিল রাতে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহানের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেন মোসারাতের বড় বোন নুসরাত জাহান। এ মামলায় গত জুলাই মাসে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ১৮ আগস্ট পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। আদালতের এই আদেশে মামলা থেকে অব্যাহতি পান আসামি সায়েম সোবহান আনভীর।
দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে
ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, আজ দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। একই সময়ে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সময়ে দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়াচিত্রের সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়েছে, ওডিশা উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।
মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও ওডিশা লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত তা বিস্তৃত।
মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
গতকাল রোববার দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় কুমিল্লায়, ১১২ মিলিমিটার।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় তেঁতুলিয়ায়, ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে কক্সবাজারে।
আজ ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক ছিল দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার, যা অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ায় ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৮ শতাংশ।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬টা ১১ মিনিটে। আগামীকাল মঙ্গলবার সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৪২ মিনিটে।
পাকিস্তান দিয়ে দিল টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য চূড়ান্ত দল দিয়ে দিল পাকিস্তান। ১৫ সদস্যের এ দলে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজ জায়গা পেলেও বাদ পড়েছেন দুই সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিক ও সরফরাজ আহমেদ।
অনুমিতভাবেই পাকিস্তানের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে উইকেটকিপার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন তিনি। মূল স্কোয়াড থেকে বাদ পড়লেও রিজার্ভ হিসেবে থাকছেন ওপেনিং ব্যাটসম্যান ফখর জামান।
পাকিস্তান দলে চমক আজম খান। ২৩ বছর বয়সী এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের পাকিস্তান দলে অভিষেক এ বছরই। খেলেছেন দুই/তিনটি ম্যাচ। কিন্তু ব্যাট হাতে তাঁর স্ট্রাইকরেট ১৫০।
পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দল: বাবর আজম ,মোহাম্মদ হাফিজ, মোহাম্মদ রিজওয়ান, খুশদিল শাহ, শোয়েব মাকসুদ, আজম খান, আসিফ আলী, শাদাব খান, মোহাম্মদ নাওয়াজ, হাসান আলী, মোহাম্মদ নাওয়াজ, মোহাম্মদ ওয়াসিম, হারিস রউফ, ইমাদ ওয়াসিম, শাহীন শাহ আফ্রিদি।
রিজার্ভ: ফখর জামান, শাহনাওয়াজ দাহানি, উসমান কাদির
স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতিতে গাইডলাইন প্রকাশ
করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আজ রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শুরু হয়েছে।
সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলসহ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত আছেন।
এমন পরিস্থিতিতে আবার শিক্ষা কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি নিতে স্কুল কলেজগুলোকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্বুদ্ধ করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন করারসহ মোট ১৯ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রকাশ করা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার গাইড লাইন। এ গাইড লাইন অনুসরণ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। আর আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করতে সব স্কুল-কলেজকে নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর মাউশি।
আজ রোববার শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সব স্কুল-কলেজগুলো খোলার প্রস্তুতি নিতে ১৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে।
১৯ দফা নির্দেশনা হলো
*শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ মুখসহ অন্যান্য স্থানে কোডিড-১৯ অতিমারি সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়গুলো ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে;
*শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে সব শিক্ষক-কর্মচারী শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা ও তা পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা করতে হবে;
*শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সবগুলো প্রবেশমুখ ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা। যদি কেবল একটি প্রবেশমুখ থাকে সেক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশমুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে হবে;
*প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে সে বিষয়ে শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী ব্রিফিং দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া ভিডিও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে;
*প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখতে হবে:
*প্রতিষ্ঠানের সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ এবং আঙ্গিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করতে হবে;
*প্রতিষ্ঠানের সব ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে;
*প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী এবং অভিভাবক প্রবেশের সময় সরকার দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালনের ব্যবস্থা করতে হবে।
*প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীর সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে;
*প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দ্বারা হাত ধোয়ার এমন ব্যবস্থা করা যাতে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢোকার আগে সবাই সাবান দিয়ে হাত ধুঁতে পারে;
*শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে পারস্পারিক ৩ ফুট শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে;
*শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা এবং কোথাও পানি জমে না থাকে তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে;
*প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরুপণ করতে হবে;
*প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে;
*স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত করতে হবে;
*প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত মেরামত, বৈদ্যুতিক মেরামত এবং পানি সংযোগজনিত মেরামত সম্পন্ন করতে হবে;
*প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সাথে সভা করে এতদসংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ছুটি আর বাড়ছে না।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফের গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম দেশ। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেয় করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৈঠক শেষে রাত পৌনে ১২টায় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা প্রথম আলোকে বলেন, করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ শনাক্ত থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। ধীরে ধীরে করোনার টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে। এ জন্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সাপেক্ষে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়।
একই দিন রাতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বেসরকারি টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, হয়তো ১২ সেপ্টেম্বর থেকেই ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতেও পারে।
প্রায় সবকিছু খুলে দেওয়ার পর এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে। ১৮ আগস্ট সচিব সভায় করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ও টিকা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২৬ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক সভায় পরিকল্পনা করা হয়, টিকা দেওয়া দেওয়া সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরা আগামী ১৫ অক্টোবরের পর থেকে খুলতে পারবে।
আর উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় কি না, সে বিষয়ে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির পরামর্শ নেওয়া হবে। সেদিনের সভাতেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শিগগির আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হবে, যা আজ রোববার অনুষ্ঠিত হবে। এই সভাতেই বিস্তারিত আলোচনা করে খোলার সিদ্ধান্ত হতে পারে।
Edited By: Farhana Zerin
এসএসসি , এইচএসসি ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস প্রতিদিন
প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে। তবে শুরুতে শুধু এ বছরের এবং আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হবে। বাকিদের সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস হবে।
আজ রোববার সচিবালয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মণি।
করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, এ বছরের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস হয়তো কিছুদিন পরেই শেষ হয়ে যাবে। এরপর নবম এবং একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরও প্রতিদিন ক্লাস হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মধ্য অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার একটি পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে আবারও উপাচার্যদের সঙ্গে বসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারা চাইলে এর আগেও খুলতে পারবে।
পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং অষ্টম শ্রেণির জেএসসি পরীক্ষার জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার প্রস্তুতি আছে। তারপরও পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে না নেওয়া গেলে তখন সেটা দেখা যাবে।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফের গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম দেশ। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেয় করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৈঠক শেষে রাত পৌনে ১২টায় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা প্রথম আলোকে বলেন, করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ শনাক্ত থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। ধীরে ধীরে করোনার টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে। এ জন্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সাপেক্ষে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়।
নগদের মালিকানায় বারবার বদল
দেশে মোবাইল ফোনে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে নগদ এখন বেশ পরিচিত একটি নাম। মাত্র আড়াই বছরে তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে নগদ যেভাবে বাজারের বড় একটা অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, সেভাবে আগে কেউ পারেনি।
তবে এখনো নগদের মালিকানা ও ব্যবসা পরিচালনা নিয়ে যে জটিলতা, সেটির সুরাহা হয়নি। নগদকে সরকারের ডাক অধিদপ্তর সেবা হিসেবে প্রচার করা হলেও এর মালিকানায় ডাক অধিদপ্তরের কোনো অস্তিত্ব নেই। আবার আর্থিক সেবা দিলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো চূড়ান্ত অনুমোদন নেই নগদের।
এই অবস্থায় নগদের সেবাকে আইনি কাঠামোর আওতায় এনে এটাকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাতে নগদের ৫১ শতাংশ মালিকানা থাকবে ডাক অধিদপ্তরের কাছে। বাকি ৪৯ শতাংশ পাবেন এখনকার মালিকেরা। নগদকে আইনি কাঠামোয় আনার জন্য সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক আপাতত এমন পরিকল্পনাই করেছে বলে জানা গেছে।
এ নিয়ে জানতে চাইলে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিরাজ উদ্দিন বলেন, নগদ এখন ডাক অধিদপ্তরের ব্র্যান্ড ব্যবহার করছে। এতে ডাক অধিদপ্তরের কোনো মালিকানা নেই। তাই ৫১ শতাংশ মালিকানা নিতে ডাক অধিদপ্তরের অধীনে একটি কোম্পানি গঠন করা হচ্ছে। এরপর ৯ সদস্যের নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হবে। পর্ষদে চেয়ারম্যানসহ পাঁচজন পরিচালক হবেন সরকারের প্রতিনিধি।
সিরাজ উদ্দিন আরও বলেন, মালিকানা নিতে আমরা কোনো টাকা দেব না। নগদ শুরু থেকে আমাদের ব্র্যান্ড ব্যবহার করছে। এর মূল্যমান হিসেবে নগদের ৫১ শতাংশ মালিকানা পাবে ডাক অধিদপ্তর। এ জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। আশা করছি চলতি বছরের মধ্যে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে অন্যান্য এমএফএস প্রতিষ্ঠানের মতো চলবে নগদ।
২০১৬ সালে মোবাইলে আর্থিক সেবা দিতে গড়ে ওঠে থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এতে নগদের প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ী ও বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদের পাশাপাশি মালিকানায় যুক্ত হন গ্রামীণফোন ও গুগলের সাবেক কর্মকর্তা কাজী মনিরুল কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, সৈয়দ আরশাদ রেজা ও মিজানুর রহমান। ২০১৭ সালে ডাক অধিদপ্তরের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার কাজ নেয় থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস। ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ কার্যক্রম শুরু করে নগদ।
নগদের কার্যক্রম শুরুর আগেই অংশীদারদের কেউ কেউ থার্ড ওয়েভের শেয়ার ছেড়ে দেন। এর মধ্যে কাজী মনিরুল কবির ছেড়ে দিলে মালিকানায় যুক্ত হন দুই সাংসদ নাহিম রাজ্জাক ও রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। এ ছাড়া নতুন করে মালিকানায় যুক্ত হন রেজওয়ানা নূর।
যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, থার্ড ওয়েভ টেকনোলজির নাম পরিবর্তন করে নগদ করা হয়েছে। আর মালিকানায় যুক্ত হয়েছেন নতুন অনেকে, ছেড়েও দিয়েছেন কেউ কেউ। আড়াই বছরে দফায় দফায় একাধিকবার মালিকানায় পরিবর্তন হয়েছে নগদের। এখন নগদের পরিচালক ৯ জন, যাঁরা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে নিবন্ধিত বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধি। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও সিঙ্গাপুরের ১ জন করে নাগরিক রয়েছেন। অন্য ৬ জন বাংলাদেশি।
নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ নিজের নামে থাকা সব শেয়ার টেলিকম এশিয়া হোল্ডিং ও অন্য পরিচালক শাফায়েত আলমের কাছে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে হস্তান্তর করেছেন। ১ জুলাই থেকে তিনি টেলিকম এশিয়া হোল্ডিংয়ের মনোনীত পরিচালক হিসেবে এমডি পদে আছেন। প্রাইম ব্যাংকের সাবেক এমডি রাহেল আহমেদ ১ জুলাই থেকে ফিনক্লুশন ভেঞ্চারের প্রতিনিধি হিসেবে নগদের পরিচালক। তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও।
রেজাউল হোসেন ১ জুলাই থেকে নগদের পরিচালক হয়েছেন ফিনটেক হোল্ডিংয়ের প্রতিনিধি হিসেবে। ব্লু ওয়াটার হোল্ডিংয়ের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচালক হয়েছেন সাফায়েত আলম। তিনি নগদের নির্বাহী পরিচালকও। মারুফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আমিনুল হক নগদের পরিচালক হিসেবে আছেন টেলিকম এশিয়া হোল্ডিংয়ের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে। সিঙ্গাপুরের কোম্পানি নিবন্ধনের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ফিনক্লুশন ভেঞ্চার ও টেলিকম এশিয়া একই গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠান।
এর বাইরে নগদে ফিনক্লুশন ভেঞ্চারের পক্ষে সিঙ্গাপুরের নাগরিক ফয়সাল আহসান চৌধুরী ও স্টালওয়ার্টে লিমিটেডের পক্ষে কানাডার নাগরিক তামজিদ রহমান পরিচালক। আর মিয়ার্স হোল্ডিংয়ের পক্ষে পরিচালক হন ব্রিটিশ নাগরিক গিলস এলাস্টার জেমস ফার্লে, যাঁর কার্যালয় ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জে।
নগদের এমডি তানভীর আহমেদ গত রোববার রাতে বলেন, যাঁরা এখন নগদের মালিকানায় আছেন, তাঁদের মধ্যে আমিসহ বেশির ভাগই দেশীয় কোম্পানির। এর মধ্যে নগদে কর্মীদেরও শেয়ার আছে। একটি কোম্পানি আগে সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত ছিল। এখন সেখানে কোনো কার্যক্রম নেই। পাশাপাশি নগদে তিনটি বিদেশি কোম্পানির তিনজন প্রতিনিধিও আছেন। নতুন করে লকডাউন না হলে চলতি বছরেই নগদ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপ নেবে।
কার্যক্রম শুরুর এক বছর পর গত বছরের এপ্রিলে নগদকে কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সাময়িক অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমএফএস-সংক্রান্ত নীতিমালা ও বেঁধে দেওয়া লেনদেনের সীমা যথাযথভাবে মেনে চলতে বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে সব শর্ত পূরণ ও আলাদা কোম্পানি গঠনের কাজ শেষ না সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি নগদে জমা হওয়া গ্রাহকের টাকার লেনদেনে যাতে ডাক অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়, সে জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মোবাইলে আর্থিক সেবায় বিকাশের পরই এখন নগদের অবস্থান। সেবাটির মাধ্যমে দৈনিক ৭০০ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। সহজে হিসাব খোলার সুবিধা ও ব্যবসার কৌশলের কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে সেবাটি। প্রায় সাড়ে ৫ কোটি গ্রাহক নিবন্ধন নিয়েছেন নগদের।
শেয়ারবাজার এর প্রধান সূচক রেকর্ড উচ্চতায়
৭ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক ছাড়াল দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। আজ রোববার ডিএসইএক্স লেনদেনের শুরুতেই বেড়ে ৭ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়। বেলা ১১টা নাগাদ সূচকটি ৭১ পয়েন্ট বেড়ে ৭০৫২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
যা পুঁজিবাজারে সূচকটির ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ অবস্থান। এই সময় পর্যন্ত ডিএসইতে ৭৭০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। হাতবদল হওয়া শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৬০ টির, কমেছে ৭৫ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০ টির।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে। বেলা ১১টা নাগাদ সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৬৭ পয়েন্ট। এই সময়ে সিএসইতে ২০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তের বৈঠক আজ
করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আজ রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকা হয়েছে। আন্তমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরার কথা রয়েছে।
করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ছুটি আর বাড়ছে না।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফের গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম দেশ। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেয় করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৈঠক শেষে রাত পৌনে ১২টায় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ শনাক্ত থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। ধীরে ধীরে করোনার টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে। এ জন্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সাপেক্ষে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়।
একই দিন রাতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বেসরকারি টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, হয়তো ১২ সেপ্টেম্বর থেকেই ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতেও পারে।
প্রায় সবকিছু খুলে দেওয়ার পর এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে। ১৮ আগস্ট সচিব সভায় করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ও টিকা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২৬ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক সভায় পরিকল্পনা করা হয়, টিকা দেওয়া সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরা আগামী ১৫ অক্টোবরের পর থেকে খুলতে পারবে।
আর উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় কি না, সে বিষয়ে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির পরামর্শ নেওয়া হবে। সেদিনের সভাতেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শিগগির আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হবে, যা আজ রোববার অনুষ্ঠিত হবে। এই সভাতেই বিস্তারিত আলোচনা করে খোলার সিদ্ধান্ত হতে পারে।
Edited By: Farhana Zerin
প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে বগুড়ায় ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
ধর্ষণের অভিযোগে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আমজাদ হোসেনকে (৫০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১২–এর বগুড়া ক্যাম্পের ক্রাইম প্রিভেনশন স্পেশালাইজড কোম্পানির সদস্যরা গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় জেলা সদর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।
মানসিক প্রতিবন্ধী এক নারীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ শনিবার আমজাদ হোসেনকে সারিয়াকান্দি থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্পেশালাইজড কোম্পানির অধিনায়ক সোহরাব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১১ আগস্ট সারিয়াকান্দি থানায় আমজাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এর পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
সারিয়াকান্দি থানা-পুলিশ ও র্যাব-১২ ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নের একটি গ্রামের মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর বাড়িতে যাতায়াত ছিল ইউপি সদস্যের। সেই সুযোগে ৪ আগস্ট ভোররাতে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন তিনি। ৭ আগস্ট সারিয়াকান্দি থানায় আমজাদের বিরুদ্ধে এজাহার জমা দেওয়া হয়। পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে টালবাহানা করে। পরে ১১ আগস্ট অভিযোগটি মামলা হিসেবে থানায় নথিভুক্ত করা হয়।
Edited By: Farhana Zerin
প্রিয়াঙ্কা আপ্লুত, পোষ্যর জন্মদিনে
বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও মার্কিন গায়ক নিক জোনাস দম্পতি জনপ্রিয়, সন্দেহ নেই। কিন্তু তাঁদের পোষ্য গিনো, পান্ডা ও ডায়ানাও কম যায় না। ইনস্টাগ্রামে তাদের অ্যাকাউন্ট আছে! তাদের জন্মদিনও পালন করা হয়। এই তো, গতকাল পালিত হলো গিনোর জন্মদিন। তবে এ সময় তাদের কাছে থাকতে পারেননি এই দম্পতি। তাতে কী! জন্মদিন উদ্যাপনে কোনো সমস্যা হয়নি। দূরে থেকেই জন্মদিনের সব আয়োজন করে রেখেছিলেন তাঁরা। প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে সেই আয়োজনেরই ছবি ও ভিডিও দেখা গেল।
গিনোর জন্মদিনে অনেক পোস্ট দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। প্রথম পোস্টে ছিল একটি ভিডিও। সেখানে দেখা গেল, মেঝেতে বসা গিনো। গলায় লাল–কালোর মিশেলে চিকার্ড বো। ক্যাপশনে এই অভিনেত্রী লিখেছেন, তোমাকে মিস করছি সোনা। দ্বিতীয় জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
পরের স্টোরিতে প্রিয়াঙ্কা গিনোর জন্মদিনের কেকের একটি ক্লোজআপ ছবি দিয়েছেন। কেকটি দেখতে দারুণ। কেকের চারপাশে কুকুরের খাওয়ার জন্য বিস্কুট এবং একটি হাড্ডিসদৃশ বড় খাবার।
শেষের স্টোরিতে দুই পোষ্য গিনো ও পান্ডা। পাশেই তাদের জন্মদিনের উপহার।
জন্মদিনে যে তাদের পাশে ছিলেন না মা–বাবা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাস, গিনোর ইনস্টাগ্রাম পোস্টেও তার প্রমাণ পাওয়া গেল। সেখানে গিনো ও পান্ডার একটি ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, আমার জন্মদিনের পার্টি। তোমাদের মিস করছি নিক জোনাস ও প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাসের তিন পোষ্যের প্রত্যেকেরই আলাদা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট আছে। সেখানে নিয়মিত পোস্টও দেওয়া হয়। গিনোর একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে নিক ও প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে তাদের তিন পোষ্যের ছবির ক্যাপশনে লেখা, আমি আমার পরিবারকে ভালোবাসি।
বড় ভাইয়ের জন্মদিনে পোস্ট দিয়েছে পান্ডাও। তাঁর ইনস্টাগ্রামে গিনো ও তার একটি ছবি দেখা গেল। ক্যাপশনে লেখা, বড় ভাই সব সময়ই পাদপ্রদীপের আলোয় থাকে। দ্বিতীয় জন্মদিনের শুভেচ্ছা। শুভ জন্মদিন ভাই।
Edited By: Farhana Zerin
জৌলুশ হারিয়েছে মহারাজা গিরিজানাথের শহর
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলের শুরুর দিকেও আদি জেলা শহরগুলোর অন্যতম ছিল দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট। পলাশী যুদ্ধের প্রায় আট বছর পর নবাবি শাসনের সঙ্গে পতন হয় ঘোড়াঘাট নগরের। পরে ইংরেজরা ঘোড়াঘাট থেকে দিনাজপুরের রাজবাটিতে তাদের প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থানান্তর করে। ধারণা করা হয়, এই অঞ্চলে দিনারাজ নামের এক রাজা ছিলেন। পরে ব্রিটিশরা রাজার সম্মানার্থেই জেলার নাম রাখেন দিনাজপুর। সেটি ১৭৮৬ সালের কথা।
গানে গানে দিনাজপুরে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন স্থানীয় কবি, ওরে বাংলাদেশের মানুষগুলা থাকিল তোমহার নিমন্তন, দিনাজপুর ভাই বেড়েয়া যান। ওরে কান্তনগর-সুখসাগর, রাজবাটি আর রামসাগর দেখিলে ভাই জুড়ায় যাবে প্রাণ। গানের কথায় জেলার সৌন্দর্যের কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। আমজাদ আলীর সেই গান মুখে মুখে বেঁচে থাকলেও দিনাজপুরের সেই ঐতিহ্য এখন মৃতপ্রায়।
সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের মুখে রাজবাটি, পরিকল্পনার অভাবে পর্যটকশূন্য রামসাগর আর কান্তনগর। আড়াই শ বছরের পুরোনো শহরের বর্তমান রাস্তাগুলো পরিণত হয়েছে খানাখন্দে ভরা গ্রামীণ মেঠো পথে। অপরিকল্পিত নগরায়ণে কালে কালে খেলার মাঠ, পুকুর, খাল-জলাশয় হারিয়ে যাচ্ছে। শহরের পানিনিষ্কাশনের প্রধান দুটি খাল ঘাগড়া ও গিরিজা ভরাট করে গড়ে উঠেছে সুদৃশ্য অট্টালিকা। শহরের মধ্যে দূরপাল্লার বাস কাউন্টার, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তীব্র যানজট, অস্বাস্থ্যকর পয়োনালাব্যবস্থা আর ময়লা-আবর্জনার ঘূর্ণিপাকে অতিষ্ঠ নাগরিক জীবন। জেলায় কেবল কৃষিতে উল্লেখযোগ্য কিছু সাফল্য আছে।
সংকটে ঘাগড়া ও গিরিজা খাল
দিনাজপুর শহরের প্রায় মধ্যভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে খাল দুটি। তবে ইতিহাস বলছে, বর্তমানের ঘাগড়া খাল পুনর্ভবা নদীরই একটি উপনদী। বর্তমান শহরটি দুই খালের উভয় পাড় ঘিরেই সম্প্রসারিত হয়েছে। শহরে মানুষ বসবাসের উপযোগী করে তুলতে দিনাজপুর রাজবংশের দশম উত্তরাধিকারী তৎকালীন মহারাজা গিরিজানাথ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। এর মধ্যে শহরের ময়লা পানি নিষ্কাশনে খাল দুটির সংস্কার, স্কুল প্রতিষ্ঠা, বেঙ্গল সংগীত সমাজ, সাহিত্য সম্মিলনী পরিষদ গঠন করেন। সর্বশেষ দিনাজপুর মিউনিসিপ্যালিটির পরপর তিনবার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করে কিছু পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছিলেন মহারাজা গিরিজানাথ।
শহরে বসবাসকারী বয়োবৃদ্ধরা বলছেন, অতীতে এ জেলা কখনো বন্যায় প্লাবিত হয়নি। অথচ ২০১৭ সালের বন্যায় প্রায় এক সপ্তাহ পুরো শহর পানিতে ডুবে ছিল। এর কারণ হিসেবে শহরের পানিনিষ্কাশনের প্রধান দুটি খাল দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন তাঁরা।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে পাউবো ঘাগড়া খাল সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে টিনশেড, আধপাকা বাড়ি, দ্বিতল, একতলা ভবনসহ মোট ৫৪৯টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে। সে বছর বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় অসমাপ্তই থেকে যায় সংস্কারকাজ। এদিকে মাত্র দেড় বছরের মাথায় সেই খাল পুনরায় দখল হয়ে ফিরে গেছে আগের অবস্থায়।
অপরিকল্পিত দালানকোঠায় ভরা
শহরের গোড়াপত্তনকালে দালানকোঠা বলতে শহরের মাঝামাঝি ছিল দেবী সিংহের বাড়ি, রায়সাহেব জমিদারবাড়ি, খাঁ সাহেব জমিদারবাড়ি, গোলকুঠিতে জমিদার কেশরী বিবির বাড়ি। বাকি সব ছিল মাটির ঘর। সেই শহরের মাঝামাঝি কোনো ভবনের ছাদে দাঁড়ালে এখন চোখে পড়বে সারি সারি উঁচু ভবন। শহরের বালুবাড়ি, সুইহারি, ঈদগাহ বস্তি, ঘাসিপাড়া, বালুয়াডাঙ্গা এবং সাম্প্রতিক সময়ে মির্জাপুর এলাকায় নতুন বাড়ি করার কোনো জায়গা ফাঁকা নেই।
ইমারত নির্মাণ বিধিমালা উপেক্ষা করে দিনাজপুর শহরে নির্মিত হচ্ছে এসব ভবন। এমনকি বর্তমানে শহরে কতগুলো ভবন রয়েছে, তার সঠিক হিসাব নেই পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, গত আড়াই বছরে ৯০০ থেকে ১ হাজার ভবনের পরিকল্পনা পাস করেছেন তিনি।
শহরজুড়ে ময়লার স্তূপ
পৌরসভার হিসাবমতে, পৌর এলাকায় নালা আছে ৫৫ হাজার ৯৮৭ মিটার। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় প্রতিটি ওয়ার্ডের নালাগুলো ভেঙে গেছে। ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি হয়ে আছে। নালা দিয়ে পানি প্রবাহিত না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি উপচে পড়ে রাস্তায়। শহরের কালিতলা, বালুয়াডাঙ্গা, পুলহাট বিসিক, সুইহারি এলাকায় প্রায় সারা বছরই রাস্তায় জমে থাকে ময়লা পানি।
সংস্কারহীন রাস্তাঘাট
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্তমান পৌর শহরের এক-তৃতীয়াংশ রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তার ওপর দিয়েই চলছে মোটরবাইকসহ ভারী যানবাহন। বর্ষায় কাদা আর শুকনা মৌসুমে ধুলাবালির মধ্যে দুর্ভোগে পৌরবাসী।
লিলির মোড় থেকে বালুয়াডাঙ্গা শহীদ মিনার, ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকা, চৌরঙ্গী থেকে রামনগর হয়ে লালবাগ এলাকা, চারুবাবুর মোড় থেকে ক্ষেত্রীপাড়া, কোতোয়ালি থানার পেছন থেকে মালদহপট্টি হয়ে নিমতলা মোড়, ঘাসিপাড়া হয়ে চাউলিয়াপট্টি, ষষ্ঠীতলা থেকে বড় ময়দান এলাকার রাস্তাঘাট যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
তীব্র যানজট
জেলা গেজেটিয়ারের তথ্যমতে, দিনাজপুরে প্রথম রোলসরয়েস নামের একটি মোটরযান কেনেন তৎকালীন মহারাজা গিরিজানাথ। তারও আগে রাজবাটিতে অস্টিন কোম্পানির ৮-১০টি মোটরগাড়ি ছিল। সেই দিনাজপুর শহরে ট্রাক্টর আর ইজিবাইকের দৌরাত্ম্যে এখন অতিষ্ঠ মানুষ। শহরের প্রধান রাস্তার কালিতলা এলাকায় দূরপাল্লার বাসের ১৯টি কাউন্টার। এসব ইজিবাইক, ট্রাক্টর আর দূরপাল্লার বাসের কারণে শহরে তীব্র যানজট এখন রোজকার চিত্র।
২০১৬ সালে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় শহরে চলাচলের জন্য ৪ হাজার অটোরিকশাকে ২ হাজার ৮৭৫ টাকা নিয়ে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে ১৪টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সদর উপজেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ অটোরিকশার নিবন্ধন দেওয়া শুরু করে। গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো উপেক্ষিতই থেকে যায়।
পানি সরবরাহ সীমিত
চল্লিশের দশকে দিনাজপুর শহরে ১৫-২০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। সে সময় শহরের মানুষকে সুপেয় পানির সুবিধা দিতে ঢোপকল স্থাপন করেছিল দিনাজপুর মিউনিসিপ্যালিটি। শহরের বুটিবাবুর মোড়, ঘাসিপাড়া এলাকায় এখনো দেখা মিলে এই ঢোপকলের। স্থানীয়রা বলছেন, একটা সময় দিনাজপুর শহরে দুই শতাধিক পুকুর ছিল। পানির অসুবিধা হতো না।
একবিংশ শতাব্দীতে এসে পৌরসভায় বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। মোট ১৪টি পানির পাম্পের সাহায্যে সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে দেওয়া হচ্ছে সাপ্লাইয়ের পানিসুবিধা। দিনে দুবার পানি সরবরাহ করা হয়। অনেকে পর্যাপ্ত পানিসুবিধা না পেয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাসাবাড়িতে পানির ব্যবস্থা করেছেন।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা
পৌরসভার বাসিন্দারা বলছেন, গত এক দশকে দিনাজপুরে উচ্চশিক্ষার সুযোগ বেড়েছে। হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়, একটি মেডিকেল কলেজ, তিনটি সরকারি কলেজ, টেক্সটাইলস কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পাশাপাশি বেড়েছে বেসরকারি স্কুল-কলেজের সংখ্যাও।
জেলার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে লোকসংস্কৃতি গবেষক বীরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদুল হক বলেন, নব্বইয়ের দশকের পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়তে শুরু করে। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়লেও শিক্ষা হয়েছে নামসর্বস্ব।
শহরে রয়েছে এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। দুটি হাসপাতালে প্রতিদিন দেড় হাজারের বেশি মানুষ বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন। হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন ৪৫০-৫০০ জন। চিকিৎসক-সংকটে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক দরকার ১৯০ জন, সেখানে বর্তমানে আছেন ৭৬ জন। অন্যদিকে জেনারেল হাসপাতালের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী চিকিৎসক প্রয়োজন ৫৯ জন। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ আছেন ১৮ জন।
সাফল্য আছে কৃষিতে
চাল লিচুতে ভরপুর জেলার নাম দিনাজপুর, স্লোগানকে দিয়ে জেলার ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। এর থেকেই বোঝা যায়, জেলার অর্থনীতি মূলত কৃষিকে ঘিরেই আবর্তিত। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় উৎপাদিত চাল নিজ জেলার প্রয়োজন মিটিয়ে প্রায় ৯ লাখ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত থাকে। যা অন্যান্য জেলায় সরবরাহ হয়।
শুধু ধান নয়, পাশাপাশি ভুট্টা, আলু, টমেটো এবং মৌসুমি ফল হিসেবে এ জেলায় আম ও লিচু চাষের আধিক্য রয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৭৮ হাজার ৬৩২ হেক্টর জমিতে ৮ লাখ ৩১ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে। অন্যদিকে বোম্বাই, মাদ্রাজী, বেদানা, চায়না-থ্রীসহ বিভিন্ন জাতের লিচুর চাষও বেড়েছে। প্রতি মৌসুমে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার লিচু বেচাকেনা হয় এই জেলায়।
বিনোদনের জায়গাও সীমিত
পৌর এলাকায় ১৫টির বেশি খেলার মাঠ ছিল। যোগেনবাবুর মাঠ, রামনগর মাঠ, সুইহারি, লালবাগ বালুবাড়ি, রাজবাটির মাঠ এখন মৃতপ্রায়। মাঠগুলো দখল হয়ে বাসাবাড়িতে ভরে গেছে। বিকেল হলেই মাঠগুলোতে কত রকমের আড্ডা, খেলাধুলা হতো। এভাবেই বলছিলেন শহরের প্রবীণ ব্যক্তি আবুল কালাম আজাদ (৭৯)।
পৌরসভার নিয়ন্ত্রণাধীন পৌর শিশুপার্কটিও সংস্কারের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে। ১৯৮০ সালে পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সেই পার্কটির শুধু দেয়ালটাই চোখে পড়বে। সেখানে শিশুদের বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে শহরের মানুষের বিনোদনের একমাত্র স্থান ২২ একর জমির ওপর দিনাজপুর গোড়-এ-শহীদ বড় মাঠ।
পর্যটনের সম্ভাবনা
দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির, রাজবাটি আর ঐতিহ্যবাহী রামসাগরের কথা সবারই জানা। জেলার অর্থনীতি কৃষিনির্ভর হলেও পর্যটক আকর্ষণের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তৎকালীন মহারাজাদের সময়কার এসব নিদর্শন দীর্ঘ সময় ধরে সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
পৌর মেয়রের কথা
পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এটি অনেক বড় একটি পৌরসভা। সেই তুলনায় উন্নয়ন বরাদ্দ অপ্রতুল। রাজনৈতিক বিবেচনায় বরাদ্দ কম পেয়েছি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নগর উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ৭ কোটি টাকার কাজ এখনো চলমান। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক থেকে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা এবং এমজিএসপি প্রকল্পের আওতায় ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। এই বরাদ্দগুলো প্রস্তাব অনুযায়ী শহরের উন্নয়ন করা হবে।
সাবেক মেয়র সফিকুল হক বলেন, দিনাজপুর শহরের ঐতিহ্য ছিল, সুনাম ছিল, সেটা হারিয়েছে। কারণ, শহরের উন্নয়ন ভাবনায় সমন্বয়হীনতা। মেয়র, সাংসদ ও স্থানীয় প্রশাসন কারও মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। ১৫ বছর ধরে শহরবাসী রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দাতা সংস্থাগুলো দলীয় পরিচয়ে বরাদ্দ দেয় না। বরাদ্দ আনতেও যোগ্যতার প্রয়োজন।
Edited By: Farhana Zerin
মূলধন ঘাটতি , এত সুবিধার পরও
করোনাভাইরাসের কারণে গ্রাহকদের ঋণ ফেরতে যেমন ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, তেমনি ব্যাংকগুলোকে এসব ঋণের হিসাবায়নেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ কারণে নতুন করে কোনো ঋণ খেলাপি হচ্ছে না। বাড়তি কোনো নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখার দরকারও পড়ছে না। এরপরও জুন শেষে সরকারি-বেসরকারি ১১ ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে।
অবশ্য এসব ব্যাংকের বেশির ভাগ করোনাভাইরাস প্রকোপের আগে থেকেই সমস্যায় রয়েছে। করোনার মধ্যে বিশেষ ছাড়েও ব্যাংকগুলো নিজেদের সেই সমস্যা থেকে বের হতে পারেনি। বরং কারও কারও অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।
জুন শেষে মূলধন ঘাটতিতে থাকা ১১ ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, অগ্রণী, বেসিক, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংক। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে এবি, বাংলাদেশ কমার্স, আইসিবি ইসলামিক, সাবেক ফারমার্স বা পদ্মা ব্যাংক। ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী ন্যূনতম যে মূলধন থাকা প্রয়োজন, এসব ব্যাংকের তা নেই।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলো বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারির পর এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ জন্য দীর্ঘদিন ধরে মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। আর সরকারি বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো বেশি সুদে তহবিল নিয়ে কম সুদে ঋণ দেওয়ার কারণে ঘাটতিতে পড়েছে, ঋণেও অনিয়ম হয়েছে। আবার বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে অনিয়ম-জালিয়াতির কারণে। এর প্রভাবে ব্যাংকগুলোর মূলধনে আঘাত এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে জুন শেষে অগ্রণী ব্যাংকের ১ হাজার ৯৬০ কোটি, বেসিক ব্যাংকের ১ হাজার ৯২৭ কোটি, জনতা ব্যাংকের ৩৪৫ কোটি, রূপালী ব্যাংকের ৬৬৭ কোটি এবং সোনালী ব্যাংকের ৩ হাজার ৫২৭ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে।
সরকারি ব্যাংকগুলোর এ ঘাটতির পেছনে বড় কারণ ঋণ–অনিয়ম। সোনালী ব্যাংকের ঘাটতি হয়েছে হল–মার্কসহ বিভিন্ন ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে। অগ্রণীর ঘাটতি হয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে। বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি হয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাইয়ের সময় দেওয়া ঋণ আদায় না হওয়ায়। জনতার ঘাটতি হয়েছে অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ জালিয়াতির কারণে। রূপালীর ঘাটতির কারণ স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন শাখার ঋণ জালিয়াতি। সরকারি ব্যাংকগুলোর কেউ কেউ এখনো মূলধনের জন্য সরকারের ওপর নির্ভরশীল।
সোনালী ব্যাংক সম্প্রতি সরকারের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকা মূলধন চেয়েছে। অন্য ব্যাংকগুলোও মূলধনের জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নতুন করে আর মূলধন জোগান দেওয়া হবে না।
বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, ব্যাংকের ঋণের বড় অংশ খেলাপি হয়েছে। আবার উচ্চ সুদে অনেক আমানত নেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকের আয় নেই বললেই চলে। এই কারণে মূলধন ঘাটতিও কমছে না। আমরা চেষ্টা করছি, নতুন করে ব্যাংকটি ঠিক করতে। এ জন্য কম সুদে তহবিল খুঁজছি।
বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে গত জুন শেষে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া এবি ব্যাংকের ৩২৯ কোটি, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ১ হাজার ৬৪২ কোটি, সাবেক ফারমার্স বা বর্তমান পদ্মা ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৬১ কোটি টাকায়। এর মধ্যে কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি হয়েছে ঋণ জালিয়াতির কারণে। এবি ব্যাংকের দুরবস্থা হয়েছে অফশোর ইউনিটের ঋণ–অনিয়ম ও স্থানীয় ঋণ জালিয়াতির কারণে। আর পদ্মা ব্যাংক ডুবছে যাত্রা শুরুর পর ব্যাংকটিতে যেসব ঋণ–অনিয়ম ও জালিয়াতি হয়েছে তার কারণে। সরকারি ব্যাংকগুলো পদ্মা ব্যাংকে ৭১৫ কোটি টাকা মূলধন জোগান দিয়েছে, এরপরও ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। এখন সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে পদ্মা ব্যাংক।
বৈশ্বিক নিয়ম অনুযায়ী, সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় এখন ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। কিন্তু জুন শেষে দেশের ১৮টি ব্যাংক অতিরিক্ত মূলধন সংরক্ষণ করতে পারেনি। ঘাটতিতে থাকা ১১ ব্যাংকের পাশাপাশি অন্য ৭টি ব্যাংক হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি, গ্লোবাল ইসলামী, ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি, এনআরবি কমার্শিয়াল, পূবালী ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
Edited By: Farhana Zerin
নেইমার উড়িয়ে দিলেন ভুঁড়ি নিয়ে রসিকতা
ব্রাজিল–ভক্তমাত্রই নিশ্চিত ছবিটা দেখে আঁতকে উঠেছিলেন। নেইমারের এ কী অবস্থা!
কোপা আমেরিকার ফাইনালে বন্ধু মেসির দল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার কাছে নেইমারের ব্রাজিলের হারের কিছুদিন পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল ছবিটা। কোপা আমেরিকা শেষে ছুটি কাটাচ্ছিলেন নেইমার। কিন্তু ছুটিতে এমনই বেহিসেবি চালচলন ছিল যে ছবিতে দেখা যাচ্ছিল, নেইমারের বেশ দৃশ্যমান একটা ভুঁড়িই গজিয়েছে!
ছুটি কাটিয়ে গত সপ্তাহে পিএসজির জার্সিতে প্রথম মাঠে নেমেছিলেন নেইমার, এরপর গতকাল খেলেছেন ব্রাজিলের হয়েও। কিন্তু বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে চিলির বিপক্ষে ব্রাজিলের ১-০ গোলে জয়ের ম্যাচ শেষেও বেশ আলোচনায় নেইমারের মুটিয়ে যাওয়া।
২৯ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড অবশ্য এসব গায়ে মাখছেন না। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে কাল এ নিয়ে নিজের মনোভাব জানিয়ে দিয়েছেন নেইমার। তাঁর ভুঁড়ি নিয়ে হাসি-তামাশা আর সমালোচনার জবাব নেইমার দিয়েছেন উল্টো রসিকতায়!
যুগে যুগে ত্রিশের কাছাকাছি বয়স হয়ে যাওয়ার পর ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের এভাবে মুটিয়ে যেতে, হারিয়ে যেতে দেখা ব্রাজিল–ভক্তদের নেইমারের ভুঁড়ি দেখে প্রমাদ গোনারই কথা। খেলার পাশাপাশি নৈশ ক্লাব, বেপরোয়া জীবনযাপন, বিয়ার-মাংসে উদ্যাপন ব্রাজিলিয়ানদের জীবনেরই অংশ। খেলোয়াড়ের পরিশীলিত জীবনযাপনও সেটিকে সব সময় দূরে রাখতে পারেনি।
রোনালদিনিও এভাবেই হঠাৎ হারিয়ে গেছেন। আরেক কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিও শেষ দিকে বেশ মুটিয়ে গিয়েছিলেন। সেসব স্মৃতি নেইমারকে ঘিরে শঙ্কা না জাগিয়ে পারে না!
কোপা আমেরিকার পর ছুটি কাটিয়ে পিএসজিতে ফিরে দুই সপ্তাহের মতো অনুশীলন করেছেন নেইমার। বন্ধু মেসিও এর মধ্যে তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন পিএসজিতে। গত সপ্তাহে রেঁসের মাঠে মৌসুমে প্রথমবার পিএসজির হয়ে নেমেছেন নেইমার।
সেই ম্যাচেই পিএসজির জার্সিতে অভিষিক্ত মেসির বদলি হয়ে উঠে গেছেন ৬৬ মিনিটে। সেদিন নেইমার ভালো খেলেননি, ফিটনেসের অভাব ছিল স্পষ্ট। ফরাসি সংবাদমাধ্যমে তখন নেইমারকে নিয়ে লেখা হলো, প্রত্যাবর্তনটা কঠিন ছিল নেইমারের, ব্রাজিলিয়ান তারকা মুটিয়ে গেছেন, দলের রক্ষণে মোটেও সাহায্য করেননি।
এরপর গতকাল চিলির মাঠে ব্রাজিলের জার্সিতে নেমেছেন। এবারও আলো ছড়াতে পারেননি নেইমার, ব্রাজিল কোনোরকমে ১-০ গোলে জিতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে শতভাগ জয়ের ধারা টেনে নিয়ে গেল ৭ ম্যাচ পর্যন্ত। কিন্তু চিরকাল ব্রাজিলের সুন্দর ফুটবলের পূজারি–ভক্তমন এতে খুশি হবে কেন! তার ওপর ম্যাচে নেইমারের ভুঁড়ির ছবিগুলোও চোখে লেগেছে তাঁদের।
সে কারণেই কিনা ম্যাচের পর নেইমারের মুটিয়ে যাওয়া নিয়ে কথা হলো অনেক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসাহাসিও চলল। নেইমারেরও চোখ এড়ায়নি সেগুলো। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে জবাব দিয়েছেন।
তাঁরা ভালো না খেললেও ব্রাজিল যে জিতেছে, সেটি মনে করিয়ে দিয়ে লিখেছেন, ছবিতে তাঁকে ‘মোটাসোটা’ দেখানোর কারণটা জার্সির আকার ঠিক না থাকা!
আমরা কি ভালো খেলেছি? না! আমরা কি জিতেছি? হ্যাঁ—ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে গতকালের ম্যাচে তাঁর একটা ছবি দিয়ে ছবির গায়ে একটা অংশে লিখেছেন নেইমার। আরেক অংশে লিখেছেন, জার্সিটা ছিল জি আকারের। আমি আমার সঠিক ওজনেই আছি। পরের ম্যাচে আমি আমার জন্য এম সাইজের জার্সি বানাতে বলব। বার্তাটির পাশে বেশ কয়েকটি হাসির ইমোজি।
আরেক পাশে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে নেইমারের পরামর্শ ছিল, মাঠে আমরা নাচতে থাকি, তোমরা দেখতে থাকো। সবশেষে নিচে লিখেছেন, আমরা ইতিহাস গড়তে থাকব।
ইতিহাস যদি হয় দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জয়ের ধারা ধরে রাখা, সে ক্ষেত্রে ইতিহাস গড়ার পথে পরের ম্যাচে বড় চ্যালেঞ্জই নেইমারদের অপেক্ষায়। বাংলাদেশ সময় রোববার দিবাগত রাত একটায় নিজেদের মাটিতে ব্রাজিল খেলবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে!
Edited By: Farhana Zerin
মারের কপাল পোড়াল , টয়লেট ব্রেক
স্তেফানোস সিৎসিপাসের হঠাৎ করেই বাথরুম পেয়ে গেল, ম্যাচের মাঝেই। সেটি হতেই পারে, প্রকৃতির ডাক বলে কথা! কিন্তু অ্যান্ডি মারে বেজায় চটেছেন কারণ সিৎসিপাস প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে এত সময় নিয়ে ফেললেন, যে ম্যাচে ছন্দই হারিয়ে ফেললেন মারে। আর এতেই ইউএস ওপেনের প্রথম রাউন্ডে সিৎসিপাসের কাছে হেরে বসেছেন ব্রিটিশ তারকা।
মারে অবশ্য জানিয়েছেন, সিৎসিপাসের এই স্বভাবের ব্যাপারে তাঁকে আগেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। তৃতীয় বাছাই এই গ্রিক তারকা ম্যাচে একটু উনিশ-বিশ ঘটার গন্ধ পেলেই অথবা নিজে একটু বেকায়দায় পড়ে গেলেই নানাভাবে প্রতিপক্ষকে বিরক্ত করার চেষ্টা করেন। হঠাৎ তাঁকে প্রকৃতি পেকে বসে অথবা কোনো চোটের ছুতোয় তিনি মেডিকেল টাইম আউটের সুযোগটা নেন। কাল ইউএস ওপেনে মারে এ ব্যাপারে সতর্কও ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। প্রকৃতির ডাকে সাড়াটা তিনি এত সময় নিয়ে দিলেন যে এগিয়ে থাকা মারে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হেরেই গেলেন ২-৬, ৭-৬ , ৩-৬, ৬-৩, ৬-৪ গেমে।
সেলসিয়াসের সমালোচনাটা মারে করেছেন একটু ঘুরিয়েই, আমি মনে করি সিৎসিপাস দারুণ একজন খেলোয়াড়। সে টেনিস খেলাটার একজন ভালো প্রতিনিধি কিন্তু আজ আমি তাঁর প্রতি সম্মান হারিয়েছি।
মারেকে পোড়াচ্ছে সিৎসিপাস কেন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ৮ মিনিট সময় নেবেন! যেকোনো খেলার মধ্যেই এ ধরনের বিরতি খেলোয়াড়দের ছন্দ নষ্ট করে দেয়। কালও মারে যে ছন্দে ছিলেন, যেভাবে খেলছিলেন, সিৎসিপাসের ‘বাথরুম ব্রেক’ সবকিছুই গুবলেট করে দিয়েছে। এটাই সব নয়। তৃতীয় সেটের পর পায়ের চোটের চিকিৎসার জন্য কিছুক্ষণ বিরতি নিয়েছিলেন গ্রিক তারকা।
মারে প্রতিবারই ম্যাচ অফিশিয়ালদের কাছে এ ব্যাপারে নিজের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। তাঁর কথা ছিল প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত বিরতি সিৎসিপাস নিচ্ছেন, পুরো বিষয়টি যতটা না নিজের প্রয়োজনে, তার চেয়ে অনেক বেশি প্রতিপক্ষকে বিপাকে ফেলতে। কিন্তু অফিশিয়ালদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা মারে পাননি বলেই জানিয়েছে ম্যাচ শেষে, কঠিন একটা ম্যাচের সময় যদি সাত-আট মিনিট করে বিরতি পড়ে, সেটি ছন্দে থাকা যেকোনো খেলোয়াড়ের জন্যই খুব হতাশার। এ সব বিরতিতে প্রয়োজনীয় ছন্দে পতন ঘটে। খুব গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে প্রতিপক্ষের পরপর দুটি দীর্ঘ সময়ের বিরতিকে আমি কোনোভাবেই কাকতালীয় ব্যাপার বলতে চাই না।
সিৎসিপাসের এমন আচরণ ম্যাচের গতিপথ বদলে দিয়েছে বলেই মনে করেন মারে, আমি বলছি না যে ম্যাচটা আমি নিশ্চিত করেই জিততাম। কিন্তু আমি মনে করি, এ ধরনের বিরতি ম্যাচের গতিপথ বদলে দিয়েছে।
সিৎসিপাস অবশ্য মারের এ অভিযোগে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, আমি মনে করি না যে বিরতি নিয়ে কোনো আইনের অপব্যবহার করেছি আমি। আমি সব সময়ই খেলার আইন মেনে চলি। এটিপি যে বিধান করেছে, সেটির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা ও আস্থা রয়েছে আমার।
মারে সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ঠিক করেননি বলেই মনে করেন গ্রিসের টেনিস তারকা, মারের যদি আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে তিনি সেটি আমাকেই বলতে পারতেন। আমরা দুজন মিলে আলোচনা করে সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে পারতাম।
মারে বলেছেন, টেনিসে এ ধরনের ব্যাপার প্রায়ই ঘটছে। খেলোয়াড়েরা এটিকে প্রতিপক্ষকে বেকায়দায় ফেলতে ব্যবহার করছে। এটি নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা হচ্ছে যে কীভাবে আইনের এ অপব্যবহার ঠেকানো যায়।
Edited By: Farhana Zerin
নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল চেয়েছিলেন ডমিঙ্গো
নিউজিল্যান্ডের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। তবে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সে সিরিজ স্থগিত হয়ে গেছে আগেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে কিউইদের বিপক্ষেই তাই সর্বশেষ সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। নির্বাচকদের জন্যও তাই সিরিজটি হতে যাচ্ছে দল ঘোষণার আগে শেষ মুহূর্তের যাচাই-বাছাইয়ের একটা উপায়। তবে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলছেন, এই সিরিজের আগেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করতে পারলে সেটা হতো সবচেয়ে ভালো।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম চার ম্যাচই বাংলাদেশ খেলেছিল অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে। শেষ ম্যাচে এসেছিল দুটি পরিবর্তন। শামীম হোসেন ও শরীফুল ইসলামের জায়গায় খেলেন মোসাদ্দেক হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে দলে ফিরেছেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে না থাকা মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, আমিনুল ইসলামরা। স্বাভাবিকভাবেই তাই পরিবর্তন আসছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
এই সিরিজ স্কোয়াডের সদস্যদের শেষ মুহূর্তের পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে ডমিঙ্গো বলেছেন, বিশ্বকাপের দল নিয়ে এরই মধ্যে ভালো একটা ধারণা হয়েছে তাঁদের, আমার মনে হয়, নিউজিল্যান্ড সিরিজ শেষ হওয়ার দু-এক দিন আগেই দল ঘোষণা করতে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। আমার মনে হয়, কারা সে দলে থাকবে, সেটা নিয়ে ভালো একটা ধারণা আছে আমাদের। অবশ্য নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগেই বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করা গেলে সেটা দারুণ হতো। তাতে খেলোয়াড়েরা আরেকটু ধাতস্থ হয়ে খেলতে পারত। বিশ্বকাপ দলে থাকা না থাকার শঙ্কা থাকত তাদের ওপর। তবে আমরা সেটা করতে পারছি না এখনই।
মুশফিক-লিটনরা ফিরলেও এখনো চোটের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ হয়নি তামিম ইকবালের। তামিমের ভবিষ্যত নিয়েও আপাতত কিছু বললেন না ডমিঙ্গো, আমার নজর আসলে এবারের স্কোয়াডে যে ১৯ জন ক্রিকেটার আছে, তাদের নিয়েই। তামিম ফিট হয়ে উঠলেই তখন সেদিকে নজর দেব আমরা। আপাতত এটা নিয়ে খুব একটা ভাবিনি আমি।
নিউজিল্যান্ড অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেছে আগেই। বাংলাদেশ সফরে আসেননি সে দলের কেউই। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অক্টোবরে শুরু হবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এর আগে সেখানে আইপিএল হলেও প্রথম পর্বে বাংলাদেশের ম্যাচগুলো হবে ওমানে। সেখানেও ম্যাচগুলো হওয়ার কথা হাই স্কোরিংই। তবে অস্ট্রেলিয়ার মতো এবারও স্পিন-সহায়ক উইকেটেই হতে পারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের আগেও ডমিঙ্গো বলেছিলেন, তিনি স্পোর্টিং উইকেট চান। এবার বললেন, তাঁর চাওয়া ‘মিরপুরের স্বাভাবিক উইকেট, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমি গ্রাউন্ডসম্যান নই। আমি ভালো উইকেটের আশায় আছি। তবে বছরের এ সময়ে আর্দ্রতা, বৃষ্টি মিলিয়ে অমন উইকেট বানানো কঠিন হবে অন্য সময়ের তুলনায়। তবে আমি ভালো উইকেটের আশা করছি। ভালো উইকেটে ব্যাটিং করে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর গুরুত্বটা জানি আমরা। একই সঙ্গে জিতে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ব্যাপারটাও গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, মিরপুরের স্বাভাবিক উইকেট থাকবে, যেখানে ১৫০-১৬০ ভালো একটা স্কোর।
বিশ্বকাপের আগে সিরিজ জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন ডমিঙ্গো, ব্যাটিংয়ের জন্য কন্ডিশন বেশ কঠিন ছিল। বড় স্কোরের দেখা পেলে অবশ্যই দারুণ হতো, তবে সেটা কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করছে। আমার মনে হয়, বোলারদের আত্মবিশ্বাস ও জেতার মধ্যে থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দেশের মাটিতে খেলছি। বিশ্বকাপের আগে তাই আত্মবিশ্বাস নিয়েই খেলে যেতে চাই।
Edited By: Farhana Zerin
সামান্থা মাইনাস আক্কিনেনি
বিয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের নামের শেষে আক্কিনেনি পদবি ব্যবহার করা শুরু করেছিলেন সামান্থা। আর এই পদবি তাঁর স্বামী নাগা চৈতন্যর। কিন্তু কিছুদিন আগে সামান্থা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের নাম থেকে আক্কিনেনি পদবি মুছে ফেলেছেন। তারপর থেকেই জোর রব, সামান্থা আর নাগা চৈতন্যর সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। বেশ কিছুদিন ধরে এই জনপ্রিয় দম্পতি নাকি আলাদা থাকছেন।
তবে এ ব্যাপারে এত দিন দুই তারকাই মুখে কুলুপ এঁটে বসে ছিলেন। তাঁরা তাঁদের বিয়ের ভাঙন নিয়ে নানান গুঞ্জনের ব্যাপারে একটা শব্দও খরচ করেননি।
তবে এ ব্যাপারে সম্প্রতি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সামান্থা। নিজের এক ছবি প্রচারণার সময় দক্ষিণি এই তারকা বলেছেন যে এসব ফালতু খবরের বিষয়ে তাঁর কোনো মাথাব্যথা নেই। তিনি বলেছেন যে, গুঞ্জন একজন তারকার জীবনে ছোট একটা অংশমাত্র। আর তাই এই দক্ষিণি তারকা এ ধরনের কোনো খবরকে একদমই পাত্তা দেন না।
সামান্থা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, আমি এসব খবরকে ঘিরে কোনোরকম প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না। আমি কোনোরকম বিতর্ক পছন্দ করি না। অন্য মানুষের যেমন নিজের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে, আমারও তা–ই আছে। নাগা চৈতন্যও সংবাদমাধ্যমকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলছেন।
২০১০ সালে তেলেগু ছবি ইয়ে মায়া চেসাবে তে একসঙ্গে কাজ করেন সামান্থা আর নাগা চৈতন্য। ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর হিন্দুমতে এবং পরদিন খ্রিষ্টান রীতিতে বিয়ে করেন তাঁরা। সামান্থার শ্বশুর দক্ষিণের জনপ্রিয় তারকা নাগার্জুন।
Edited By: Farhana Zerin
বিতর্কে প্রসেনজিৎ , জ্যোতি বসুকে বাদ দিয়ে
২৬ আগস্ট ছিল মাদার তেরেসার ১১১তম জন্মদিন। বিশেষ এই দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাদার তেরেসার সঙ্গে তোলা পুরোনো একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে শোরগোল। কী ছিল সেই ছবিতে?
নেটিজেনদের দাবি, আসল ছবিতে প্রসেনজিতের পাশেই ছিলেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী দেবশ্রী রায়। আর মাদার তেরেসার এক পাশে বসে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। ছবি থেকে তাঁদের কেটে বাদ দিয়ে ছবিটা পোস্ট করেছেন প্রসেনজিৎ। ২৬ আগস্ট থেকেই এই নিয়ে শুরু হয় ট্রল।
আলোচনা–সমালোচনার মুখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসল ছবিটি আবার পোস্ট করে এই অভিনেতা লিখেছেন, আমি সাধারণত ট্রলের জবাব দিই না। কিন্তু এইবার দেওয়াটা দরকারি মনে হলো। কারণ, আলোচ্য ছবিটা এমন কিছু মানুষকে জড়িয়ে, যাঁদের আমি ভীষণ সম্মান করি।
ছবিটি থেকে তাঁদের কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে কি না, এ প্রশ্নে তিনি আরও লেখেন, প্রথমত, আমি ছবিটি ক্রপ করিনি। এটা আমাকে পাঠানো হয়েছিল। অনেক আগেই আমি ছবিটি পেয়েছিলাম। মাদার তেরেসার জন্মবার্ষিকীতে এটা শেয়ার করার কথা ভেবেছিলাম।
দ্বিতীয়ত, মাদার তেরেসার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ছাড়া সেই পোস্ট দেওয়ার পেছনে অন্য আর কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।
শেষ কথা, ট্রলে যেমনটা বলা হচ্ছে, তার বিপরীতে আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কোনো ছবি কেউ শেয়ার করলে তার মানে এই না যে সে কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত বা কোনো দলকে অপছন্দ করে এবং সে কারণেই আমি ছবিটির আনক্রপড সংস্করণ সংযোজন করছি।
সব শেষে তিনি লিখেছেন, খুব খারাপ একটা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দুনিয়া। আসুন, অপ্রয়োজনীয় বিদ্বেষ না ছড়িয়ে বরং দয়া ছড়াই।
এমন স্ট্যাটাস দেওয়ার পরও অনেকে তির্যক মন্তব্য করতে ছাড়ছেন না। সব্যসাচী দে নামের একজন লিখেছেন, জ্যোতি বসুর কাছে বুম্বাদার ক্ষমা চাওয়া উচিত। সুমিত সেনগুপ্ত নামে একজন লিখেছেন, প্রসেনজিৎ বাবু, একটা মিথ্যা ঢাকতে গিয়ে আরও মিথ্যা বলছেন।
তবে অনেকেই প্রসেনজিতের পাশে রয়েছেন। মলয়াংশু নামের একজন মন্তব্য করেছেন, বুম্বাদা, এদের বেশি পাত্তা দেবেন না। মাদার তেরেসাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মাদারের ছবিই যথেষ্ট, আর কারও ছবি থাকা সেখানে বাতুলতা।
Edited By: Farhana Zerin
মাত্র ৯০০ টাকা কিস্তিতে লোন
আরো পড়ুন: নারী দেহের যে ৫টি অঙ্গ বড় হলে সৌভাগ্যবতী হিসেবে ভাবা হয়
জীবননগরে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় নারী, গাছে বেঁধে নির্যাতন…
জনবল নিয়োগ দিবে একে টেলিভিশন
বদলে যাচ্ছে চাকরির বাজার এবং বাড়ছে ডিজিটাল কন্টেন্টের চাহিদা। সময় পরিবর্তনের সঙ্গে মিল রেখে একে টেলিভিশন এর ডিজিটাল বিভাগে তিন ক্যাটাগরিতে জনবল নিয়োগ করা হবে।
পদের নাম:
১. ডিজিটাল কন্টেন্ট এক্সিকিউটিভ
কাজের প্রকৃতি : ডেস্ক জব
কাজের ধরণ : ফুলটাইম
বেতন : ১৪ হাজার থেকে ১৬ হাজার
প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:
*ইউটিউবসহ সোশ্যাল মিডিয়ার কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও জ্ঞান
*ফটোশপের বেসিক ধারণা
*এসইও সম্পর্কে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা
*কাজের চাপ নেবার ইতিবাচক মানসিকতা
*প্রয়োজনে নতুন কিছু শেখার প্রতি আগ্রহ
*বাংলা ও ইংরেজিতে দ্রুত টাইপ করার ক্ষমতা
*সংবাদ সম্পাদনা সম্পর্কে জ্ঞান
*বাংলা শুদ্ধ বানান জানা
দায়িত্বসমূহ:
*দিন-রাত ২৪ ঘণ্টার যে কোনো সময়ে (রোস্টার/শিডিউলের ভিত্তিতে) কাজ করার মানসিকতা
*ফেসবুক ও ইউটিউব -এর কন্টেন্ট নিয়ে সৃজনশীলতা প্রদর্শন এবং নতুন নতুন পরিকল্পনা ও ভালো ফলাফল আনার মানসিকতা
*প্রতিযোগিতাপূর্ণ অনলাইন প্ল্যাটফর্মের নতুন নতুন ফিচার ও আপডেট সম্পর্কে অবগত থাকা
শিক্ষাগত যোগ্যতা
স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন (সাংবাদিকতা এবং মার্কেটিং অভিজ্ঞদের অগ্রাধিকার)
প্রয়োজনীয় দক্ষতা
*ইউটিউব, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম সম্পর্কে অভিজ্ঞতা
*একসঙ্গে একাধিক কাজ করার ইতিবাচক মানসিকতা
পদের নাম:
২. ভিডিও এডিটর
কাজের প্রকৃতি : প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং ও আফটার ইফেক্টস এ দক্ষতা
কাজের ধরণ : ফুলটাইম
বেতন : ১৮ থেকে ২০ হাজার
প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:
*ইউটিউবসহ সোশ্যাল মিডিয়ার কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও জ্ঞান
*ফটোশপের বেসিক ধারণা
*কাজের চাপ নেবার ইতিবাচক মানসিকতা
*প্রয়োজনে নতুন কিছু শেখার প্রতি আগ্রহ
*বাংলা শুদ্ধ বানান জানা
দায়িত্বসমূহ:
*দিন-রাত ২৪ ঘণ্টার যে কোনো সময়ে (রোস্টার/শিডিউলের ভিত্তিতে) কাজ করার মানসিকতা
*ফেসবুক ও ইউটিউব -এর কন্টেন্ট নিয়ে সৃজনশীলতা প্রদর্শন এবং নতুন নতুন পরিকল্পনা ও ভালো ফলাফল আনার মানসিকতা
শিক্ষাগত যোগ্যতা:
স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম এইচএসসি পাশ
প্রয়োজনীয় দক্ষতা:
*ইউটিউব, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম এর ভিডিও সম্পর্কে ধারণা
*একসঙ্গে একাধিক কাজ করার ইতিবাচক মানসিকতা
পদের নাম
৩. স্ক্রিপ্ট রাইটার কাম প্রেজেন্টার:
কাজের প্রকৃতি : স্ক্রিপ্ট তৈরি এবং সমসাময়িক বিষয়ের উপর উপস্থাপনা
কাজের ধরণ : ফুলটাইম অথবা পার্ট টাইম
বেতন : আলোচনা সাপেক্ষে
প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:
* বাংলায় শুদ্ধ উচ্চারণ
* সুন্দর বাচনভঙ্গি
*প্রয়োজনে নতুন কিছু শেখার প্রতি আগ্রহ
*একসঙ্গে একাধিক কাজ করার ইতিবাচক মানসিকতা
দায়িত্বসমূহ:
* প্রয়োজনে যে কোনো সময়ে (রোস্টার/শিডিউলের ভিত্তিতে) কাজ করার মানসিকতা
*ফেসবুক ও ইউটিউব -এর কন্টেন্ট নিয়ে সৃজনশীলতা প্রদর্শন এবং নতুন নতুন পরিকল্পনা ও ভালো ফলাফল আনার মানসিকতা
শিক্ষাগত যোগ্যতা:
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী (জার্নালিজমের স্টুডেন্ট বা প্রেজেন্টেশন কোর্স সম্পন্নদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে)
আগ্রহীদের উপরের শর্তাদি পূরণ করে info@aktvbd.com ইমেইলে অথবা সরাসরি আবেদন করার জন্য অনুরোধ করা হলো। আবেদনে অবশ্যই পদের নাম উল্লেখ করতে হবে। আবেদন করতে নিচের লিংক অথবা ছবিতে ক্লিক করুন….
সরাসরি যোগাযোগ:
একে টেলিভিশন
বাড়ি-১১, সড়ক-১১, ব্লক-ডি, মিরপুর-১২, ঢাকা-১২১৬
মুঠোফোন: ০১৯১৫-৫৪৭৬৬৬
web: www.aktvbd.com