প্রযুক্তির কল্যাণে গত এক দশকে বদলে গেছে বিনোদনের কনটেন্ট সেই সাথে বদলেছে বিনোদন মাধ্যমও। একসময় টেলিভিশন চ্যানেল গুলোই ছিলো নাটক বা গান প্রচার ও দেখার একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু সময়ের সাথে আধুনিকতার উত্তরণে সেই স্থান নিয়ে নিয়েছে ইউটিউব, আইফ্লিক্সের মত স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম গুলো।
এতে শিল্পের প্রসার হলেও বিপত্তি ঘটছে শিল্পের মান নিয়ে। টেলিভিশনে নাটক প্রচারের ক্ষেত্রে প্রিভিউ কমিটি থাকে, মানতে হয় নির্দিষ্ট নিয়ম। কিন্তু ইউটিউব স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম হওয়ায় যে কেউ নাটক, মিউজিক ভিডিও, শর্ট ফিল্ম বানিয়ে প্রকাশ করতে পারেন। এতে নির্মাতার স্বাধীনতা থাকলেও মান পড়ছে কনটেন্টের ।
সাবস্ক্রাইবার ও ভিউর লোভে দর্শক টানতে তৈরি করা হচ্ছে মানহীন সস্তা সংলাপ। যেগুলোর নামগুলোও দেওয়া হচ্ছে অরুচিকর। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন নাটকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
ইউটিউবভিত্তিক নাট্য নির্মাতা মাহমুদ মাহিন বলেন, ‘টেলিভিশনে বাধ্যবাধকতা থাকে। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবসম্মত অনেক কিছুই দেখানো যায় না। আমরা প্রজন্মের বাস্তব চিত্রটা দেখানোর চেষ্টা করি। ইউটিউবে এটা দেখানো যায় সহজে। একজন পরিচালক কাজের স্বাধীনতা খুঁজবে। এটাও ঠিক, এসব করতে গিয়ে কিছু বিষয় খোলামেলা উপস্থাপন হয়ে যাচ্ছে।’
বিষয়টা নিয়ে নাট্যকার মাসুম রেজা বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আমাদের যারা ভালো কাজ করতেন, হয়তো বেশি টাকার কারণে তারাও এই দিকটায় ঝুঁকছেন। এভাবে চলতে পারে না। এটাকে নিয়ন্ত্রণ নয়, পরিবেশনা রীতির মধ্যে আনা উচিত। মনিটরিং থাকা উচিত। সুস্থ বিনোদনের জন্য যারা নাটক করছেন, এটা তাদের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা।’
নির্মাতা অমিতাভ রেজা বলেন, ‘কোন ধরনের দর্শকের জন্য আমি নাটক, ওয়েব সিরিজ কিংবা চলচ্চিত্র বানাচ্ছি, সেই বিষয়টা মাথায় রেখে রেটিং করে দেওয়া উচিত। আমি আমার দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করব।’
ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘এ ধরনের নাটক যারা তৈরি করেন, তাদের রুচি ও মূল্যবোধে সমস্যা আছে। নিজেদের মান–সম্মানের বিষয়টি উপলব্ধি করতে হবে। যারা শুধু ইউটিউবের জন্য নাটক বানান, তাদের সঙ্গে আমরা সাংগঠনিকভাবে বসার কথাও ভেবেছি।’