ডলারের বাজার স্বাভাবিক করতে ডলারের দামে কিছুটা পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকগুলো।
প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দাম ঠিক করা হয়েছে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা। আগে প্রবাসী আয়ে প্রতি ডলারের জন্য ১০৮ টাকা দেওয়া হতো। প্রবাসী আয়ে ডলারের নতুন এ দাম কার্যকর হবে ১ অক্টোবর থেকে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এই সভা হয়।
এবিবির পক্ষে সংগঠনটির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন, বাফেদার পক্ষে সংগঠনটির চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিমসহ দুই সংগঠনের কমিটি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম কমানো হলেও রপ্তানি আয় নগদায়নে আগের মতোই প্রতি ডলারের দাম ৯৯ টাকা থাকবে। আমদানি দায় পরিশোধ ও আন্তব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারের দাম হবে প্রবাসী ও রপ্তানি আয় থেকে কেনা ডলারের গড় দামের চেয়ে সর্বোচ্চ ১ টাকা বেশি। সভা শেষে বাফেদার চেয়ারম্যান আফজাল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডলারের বাজার স্বাভাবিক রাখতে সময়ে–সময়ে দাম পর্যালোচনা করার কথা ছিল। এর ধারাবাহিকতায় আমরা বসে নতুন দাম ঠিক করেছি। নতুন এ দাম ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।’
৮ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ, সংস্থাটি একের পর এক পদক্ষেপ নেওয়ার পরও ডলারের সংকট কাটাতে পারেনি, বরং ডলারের বাজারে জটিলতা বাড়ে।
এ কারণে নিজেদের অবস্থান বদল করে ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যাংকগুলোকে জানানো হয়, প্রবাসী ও রপ্তানি আয়, আমদানি বিল নিষ্পত্তিসহ প্রতিটি লেনদেনে ডলারের দাম হবে ভিন্ন ভিন্ন। সব ব্যাংককে এ দামেই ডলার কেনাবেচা করতে হবে। আর ডলার কেনাবেচায় সর্বোচ্চ মুনাফা করা যাবে এক টাকা। ওই নির্দেশনার ভিত্তিতে এবিবি ও বাফেদা ডলারের দাম নির্ধারণ করে, যা ১২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সভায় বসে আবারও ডলারের দাম পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে।
এদিকে ডলার সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে নিয়মিত ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভ দিনে দিনে কমছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার, এখন তা ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের নিচে নেমেছে। ব্যাংকে ডলারের দাম ১০০ টাকা ওপরে হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক ৯৬ টাকায় রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে।
গতকাল সোমবার ব্যাংকগুলো প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের সর্বোচ্চ দাম দিয়েছে ১০৮ টাকা। তবে রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ে প্রতি ডলারের গড় দাম ছিল ১০১ টাকা ৯৬ পয়সা। বাফেদার তথ্য অনুযায়ী, গতকাল প্রবাসী ও রপ্তানি আয় মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সা দামে ডলার কেনে পদ্মা ব্যাংক।
১০৬ টাকা ৩৭ পয়সা দামে ডলার কেনে ইসলামী ব্যাংক। রূপালী ব্যাংক ডলার কিনেছে ১০৫ টাকা ৭৩ পয়সা, ইউনিয়ন ব্যাংক ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা, সোনালী ব্যাংক ১০৫ টাকা ৪৫ পয়সা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ১০৫ টাকা ৪৩ পয়সা, কৃষি ব্যাংক ১০৫ টাকা ১৩ পয়সা।