ব্যাটসম্যানদের কোনো আত্মবিশ্বাস দেখছেন না প্রধান কোচ

প্রথম ইনিংসে ১০৩ রান, দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৫ রান—খালি চোখে অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশ দল প্রথম ইনিংসের তুলনায় দ্বিতীয় ইনিংসে ভালোই ব্যাটিং করেছে। কিন্তু ম্যাচের পরিস্থিতিতে এই ভালোর আসলে কোনো মানে নেই। দুই ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণেই তো অ্যান্টিগা টেস্টের টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে প্রায় নিশ্চিত হারের অপেক্ষায় বাংলাদেশ দল।

বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও তাই রান সংখ্যা দুটি উল্লেখ করে বার বার বলছিলেন, ‘নট গুড এনাফ।’

ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে এরপর যখন ব্যাটিং ব্যর্থতার বিশ্লেষণে গেলেন, তখন ডমিঙ্গোর সরল স্বীকারোক্তিটা ছিল এমন, ‘ভালো না। দুই ইনিংসেই অনেকে আলগা শট, অনেক বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রথম ইনিংসে ১০৩ রান, অবশ্যই এর চেয়ে বেশি রান করা উচিত। দ্বিতীয় ইনিংসেও ২৪৫ রানের চেয়ে বেশি রান করা যেত। এটাই শেষ কথা, অনেক বেশি আলগা শট খেলেছি আমরা।

আলগা শটের পেছনের সমস্যাটা কৌশলগত মনে করেন না ডমিঙ্গো। বরং তাঁর মতে, বাংলাদেশ দল টেস্ট খেলছে এক দল আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগতে থাকা ব্যাটসম্যান নিয়ে।

ব্যাটসম্যান

তাঁর কথা, ‘ব্যাটসম্যানরা সবাই আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিতে ভুগছে। আমাদের বড় বড় ব্যাটসম্যান যারা আছে, মুমিনুল, শান্ত (নাজমুল)—অনেকেই আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিতে আছে। ক্রিকেটে আত্মবিশ্বাস অনেক বড় ব্যাপার। এই মুহূর্তে ছেলেদের ব্যাটিংয়ে কোনো আত্মবিশ্বাস নেই।’

টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মাঝেও সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান জোড়া অর্ধশতক করে বাংলাদেশকে লিড এনে দেন। কিন্তু দুজনের কাছে আরও বড় চাওয়া ছিল কোচের। ফিফটিতে না থেমে দুজনের একজন সেঞ্চুরি করলে ম্যাচের ছবিটা ভিন্ন হতে পারত বলে বিশ্বাস ডমিঙ্গোর, ‘ওরা দুজন ভালো ব্যাটিং করেছে। ঝুঁকি কম নিয়ে খেলেছে। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দেখিয়েছে ওদের কী করা উচিত ছিল। কিন্তু নতুন বল দুজনকেই আউট করেছে। ৬০ রানের ইনিংস আমাদের টেস্ট জেতাবে না। আমাদের সেঞ্চুরি করতে হবে। দুজন ৬০ রানের ইনিংস খেলেছে। দুজনের কেউই সেঞ্চুরি করেনি। এটাই মূল কথা।’

 

ব্যাটসম্যান

 

রান খরা থেকে বেরিয়ে আসার দায়িত্বটাও ব্যাটসম্যানদেরই নিতে বলেছেন প্রধান কোচ, ‘ব্যাটসম্যানদের এই অবনমন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ফর্মে আসতে গেলে মানসিক দিক দিয়ে শক্ত হতে হবে। এ ম্যাচে এবং পরেরটির মধ্যে টেকনিক্যাল পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। সব রকমের বাড়তি আওয়াজ, সমালোচনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে ক্রিকেট বল খেলার দিকেই নজর দিতে হবে। হ্যাঁ, এগুলো করার চেয়ে বলা সহজ। তবে সেরা খেলোয়াড়েরা এ সব করার সামর্থ্য রাখে।’

 

ব্যাটসম্যান

 

ব্যাটসম্যানদের দুর্দশায় যখন চারদিকে অন্ধকার, তখন আলো জ্বলছে শুধু বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমণে। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসের বাংলাদেশ দলের বোলিং ছিল প্রশংসনীয়, বলছেন ডমিঙ্গো, ‘বোলাররা সবাই দুই ইনিংসেই দারুণ বোলিং করেছে। প্রথম ইনিংসে আমার দেখা ওদের সেরা বোলিংটাই করেছে। এই উইকেটে ২৬০ রানে রাখা সহজ কথা নয়। গত দুই দিন বোলারদের পারফরম্যান্সে আমি খুবই গর্বিত।’

খালেদ আহমেদ তৃতীয় দিন বিকালে দ্রুত ৩ উইকেট নিয়ে চাপে ফেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। চতুর্থ ইনিংসে মাত্র ৮৪ রানের পুঁজি নিয়েও তখন বাংলাদেশ দল অঘটনের স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু এখনই খালেদকে প্রশংসায় ভাসালেন না প্রধান কোচ, ‘সে তিন উইকেট পেয়েছে। কিন্তু তার উন্নতি করার অনেক জায়গা আছে। মাঝে মাঝে ভালো বল করেও উইকেট পাবেন না। আবার খুব ভালো না করেও উইকেট পাবেন। এটাই ক্রিকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো বল করেছে, ভালো কিছু উইকেট নিয়েছে। তবে তার উন্নতির অনেক জায়গা আছে।’

ব্যাটসম্যান

প্রথম ইনিংসে খালেদের মতোই নতুন বলে দাপুটে ছিলেন প্রায় এক বছরের বেশি সময় পর টেস্ট দলে ফেরা মোস্তাফিজুর রহমান। চোট প্রবণ এই বাঁহাতি পেসারের প্রসঙ্গেও ডমিঙ্গো শোনালেন সতর্কবার্তা, ‘সে ভালো বল করেছে। কিন্তু আরও কিছু চাই তার কাছ থেকে। তার গতি একটু বাড়াতে হবে। সে অবশ্য খুব বেশি বোলিং করেনি। তবে তার নিয়ন্ত্রণ ভালো ছিল। ভালো সুইং ছিল। তাকে খুব সাবধানে খেলাতে হবে। সে অনেক ক্রিকেট খেলেছে। আরও অনেক খেলতে হবে। তাকে বোলিং করিয়ে মাটিতে মিশিয়ে ফেলা যাবে না। সে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একজন বোলার, বিশেষ করে সাদা বলে।’

 

প্রধান কোচপ্রধান কোচআত্মবিশ্বাস

 

কোচ

আইপিএল আদলে তিন ভাগে আইসিসির নিলাম

সৌদি আরবে আরেক বাংলাদেশি হজযাত্রী-র মৃত্যু

Leave A Reply

Your email address will not be published.