সাংবাদিকেরা ভুল করলে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রেখে একটি আইন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর এই বক্তব্যের এক দিন পরেই আজ বুধবার তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোনো নতুন আইন হচ্ছে না।
আজ দুপুরের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সংগঠন বিএফইউজে—বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা বিভিন্ন দাবি নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি জানি না প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কী বলেছেন। তবে প্রথমত দেশে কোনো নতুন আইন হচ্ছে না। প্রেস কাউন্সিলকে শক্তিশালী করার জন্য প্রেস কাউন্সিলই অনেক আগে, সম্ভবত পাঁচ বছর আগে প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের একটি প্রস্তাব করেছিল। সেটি এখনো প্রক্রিয়ার মধ্যেই রয়েছে। আর এই প্রস্তাব কাউন্সিলের সদস্যরাই করেছেন এবং কাউন্সিলে বেশির ভাগ সদস্যই সাংবাদিক। তাঁরাই প্রেস কাউন্সিলকে সংশোধনের জন্য আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। নতুন কোনো আইন হচ্ছে না
আগের দিন মঙ্গলবার রাজশাহী সার্কিট হাউসে ‘প্রেস কাউন্সিল আইন ও আচরণবিধি এবং তথ্য অধিকার আইন অবহিতকরণ’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সাংবাদিকেরা অন্যায় করলে জরিমানা করার বিধান রেখে আইন হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক।
প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকদের তালিকা করার যে উদ্যোগ নিয়েছে, সে বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, সাংবাদিকদের একটি তালিকা থাকলে ভালো হয়।
এ সময় প্রেস কাউন্সিলের সদস্য এবং বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আইন করলে তো মন্ত্রণালয় করবে। কোনো সংস্থা তো আইন করবে না। সেখানে তথ্যমন্ত্রী পরিষ্কার করে বলেছেন, সংবাদপত্র বা সাংবাদিক-সংক্রান্ত নতুন কোনো আইন হচ্ছে না। তিনিও মনে করেন, এটিই সঠিক।
এই সাংবাদিক নেতা আরও বলেন, আরেকটি বিষয় হলো প্রেস কাউন্সিল বা মন্ত্রণালয় কোনো সাংবাদিকের তালিকা করবে না। প্রেস কাউন্সিল ও পিআইবির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠান ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হবে। তখন সম্পাদক যে তালিকা দেবেন, সেটিই একত্র করে প্রেস কাউন্সিলের তালিকায় থাকবে। আর সাংবাদিক ইউনিয়নও তালিকা দেবে। ইউনিয়নের গঠনতন্ত্রে আছে, একজন সাংবাদিক কত দিন বেকার থাকতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ। এ সময় সংগঠনের আরও কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বিএফইউজের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে তথ্যমন্ত্রীর হাতে একটি পত্র তুলে দেন নেতারা। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে নবম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদ সংশোধন করে দ্রুত বাস্তবায়ন করা, সার্কুলেশনের নামে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) ‘ভুয়া’ তালিকা সংশোধন করে প্রতিটি পত্রিকার প্রকৃত প্রচারসংখ্যা নির্ধারণ, সাংবাদিকতা সম্পর্কিত কোনো আইন প্রণয়নের আগে বিএফইউজের সঙ্গে পরামর্শ করা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা পরিপন্থী সংশোধন করা।
তিস্তা চুক্তির জন্য সবুর করতে বললেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী