কয়রায় ঝলসে দেওয়া হলো নারীর মুখ ও শরীর

খুলনার কয়রা উপজেলায় এক নারীর মুখ ও শরীর ঝলসে দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।

রাতেই ওই নারীকে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাঁর স্বজনদের দাবি, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে অ্যাসিড দিয়ে ওই নারী মুখ ও শরীর ঝলসে দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১১ জুলাই ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়েছিল।

কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুজিত কুমার বৈদ্য বলেন, ওই নারীর ওপর যা ছোড়া হয়েছে, সেটি অ্যাসিড কি না, তা নিশ্চিত নয়। তবে অ্যাসিড হলেও ব্যাটারির অ্যাসিড বা কম ক্ষমতার অ্যাসিড হতে পারে। গুরুতর কোনো জখম হয়নি। তারপরও পরীক্ষা এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কয়রায় ঝলসে দেওয়া হলো নারীর মুখ ও শরীর

 

তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তাঁদের স্বজনেরা অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে দিয়েছেন। এর আগে ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় আসামিরা বর্তমানে জামিনে আছেন। আসামিরা বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

ওই নারীর শ্বশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ি একই এলাকায়। তবে ঘটনাটি ঘটেছে বাবার বাড়িতে। পরিবারের সদস্যরা জানান, অন্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবে শুক্রবার রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। পাশের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন তাঁর কলেজপড়ুয়া ছেলে। দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ গায়ে পানির মতো কিছু একটা পড়ে। ঘুম ভাঙতেই জানালা দিয়ে দেখতে পান কয়েকজন দৌড়ে পালাচ্ছেন। ততক্ষণে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জ্বলতে শুরু করে। ঘরে টানানো মশারিও পুড়ে গেছে। এরপর এলাকাবাসীর সহায়তায় ভোর পাঁচটার দিকে ওই নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তাঁরা। ওই নারীর মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে। অবস্থার অবনতি হলে আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

কয়রায় ঝলসে দেওয়া হলো নারীর মুখ ও শরীর

 

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বি এম দোহা বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে। এর আগে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করার অভিযোগে করা মামলার আসামিরা সবাই জামিনে রয়েছেন।

স্বজনেরা আরও বলেন, নগ্ন করে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করার দুই মাস যেতে না যেতেই এবার অ্যাসিড ছুড়ে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। আগের মামলায় সহজে জামিন পাওয়ায় এমন অপরাধ করতে সাহস পেয়েছে প্রতিপক্ষ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহার পরদিন বিরোধপূর্ণ জমিতে ঘর তুলতে আসেন ওই নারীর চাচা, চাচাতো ভাইসহ ২৫ থেকে ৩০ জন। এ সময় তিনি বাধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চাচাতো ভাইয়েরা তাঁকে মারধর করতে করতে বিবস্ত্র করে ফেলেন।

পরে তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে সড়কের পাশের একটি মেহগনি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকেরা। তিনি দীর্ঘদিন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। ওই সময় মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ওই নারী।

 

জাজিরায় ৪ মাসে ৩ বার বিএনপির কমিটি গঠন!

৬ বিষয়ের এসএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁস, কেন্দ্রসচিবই জড়িত

Leave A Reply

Your email address will not be published.