আক্ষেপ আর আনন্দ নিয়ে ক্রিকেটকে বিদায় বললেন ঝুলন

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু, ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই শেষ। নদীয়ার চাকদা থেকে যে লড়াই শুরু হয়েছিল, তার শেষ হলো লন্ডনের লর্ডসে। আনজুম চোপড়াদের সঙ্গে নিয়ে যে পথচলার শুরু হয়েছিল, দীর্ঘ পরিক্রমা শেষে সে যাত্রার ইতি হলো শেফালি ভার্মাদের পাশে রেখে।

বলা হচ্ছে ভারত নারী দলের সর্বকালের সেরা পেসার ঝুলন গোস্বামীর কথা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কাল সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে দিয়ে দুই দশকের ক্যারিয়ারে যতি এঁকেছেন ঝুলন।

২০ বছর ধরে ভারতের নারী ক্রিকেটের পটপরিবর্তন হয়েছে অনেক। তবে ঝুলন গোস্বামী ছিলেন অনেকটা বটবৃক্ষের মতো। এ জন্যই হয়তো দলের অনেকেই ভালোবেসে ডাকেন ‘ঝুলনদি’ বলে।

আক্ষেপ আর আনন্দ নিয়ে ক্রিকেটকে বিদায় বললেন ঝুলন

বিদায়বেলাতেও পরিবারের বড় বোনের মতো তিনি বলেছেন, ‘আমাকে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কারণ, আবেগে ভেসে গিয়ে ক্রিকেট মাঠে নামতে পারি না আমি। আমি পুরোপুরি কঠিন চরিত্রের মানুষ।’

তিনি এভাবে বলতে পারলেও যাঁরা তাঁকে ‘ঝুলনদি’ বলে ডাকেন, তাঁরা নিজেদের সামলাতে পারেননি। তাই তো মাঠে নামার আগে সতীর্থদের অনেকরই চোখ ভিজেছিল জলে। ভেজা চোখে মাঠে নেমেও বিদায়বেলায় প্রিয় ঝুলনদিকে তাঁরা ঠিকই জয় উপহার দিয়েছেন।

ঝুলন ব্যাট হাতে প্রথম বলে ফিরে গেলেও বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট।
বিদায়বেলায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ঝুলন, ‘আমি বিসিসিআইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। ধন্যবাদ দিতে চাই আমার সতীর্থ, কোচ, অধিনায়কসহ সবাইকে। আমাকে আজ এ সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। এটা সত্যিই আমার জন্য একটা বিশেষ মুহূর্ত।’

আক্ষেপ আর আনন্দ নিয়ে ক্রিকেটকে বিদায় বললেন ঝুলন

ঝুলন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন ২০০২ সাল। তবে ভারতের ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্কটা আরও আগে থেকেই। ১৯৯৭ সালে ভারতের মাটিতে হওয়া ক্রিকেট বিশ্বকাপে ঝুলন ছিলেন বলগার্ল। ওয়ানডেতে ২০৪ ম্যাচ খেলে ঝুলনের উইকেট ২৫৫টি। মেয়েদের এই সংস্করণে তিনি ২০০ উইকেট নেওয়া একমাত্র বোলার। ১৯১ উইকেট নিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় দক্ষিণ আফ্রিকার শাবনিম ইসমাইল।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৬৮ ম্যাচ খেলে ভারতের নারী দলের এ পেসারের সংগ্রহ ৫৬ উইকেট। ১২ টেস্টে তাঁর শিকারসংখ্যা ৪৪। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উইকেটসংখ্যা ৩৫৫।

এত প্রাপ্তির মধ্যেও বিদায়বেলায় ৩৯ বছর বয়সী ঝুলনের একটি আফসোস সঙ্গী। ২০০৫ ও ২০১৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলেছেন। কিন্তু একবারও বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ পাননি। প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এবং পরে ইংল্যান্ডের সঙ্গে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় ভারতের।

 

গত শুক্রবার ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তাঁর মুখে ছিল শিরোপা জিততে না পারার সেই আক্ষেপ, ‘আমি দুটি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছি। আমরা যদি এর মধ্যে একটা জিততাম, তাহলে আমাদের জন্য বিশাল অর্জন হতো। কারণ, এটাই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। এই একটি আফসোস আমার আছে। এ ছাড়া বাকি সবকিছু দারুণ ছিল।’
বিদায়বেলায় অবশ্য একটা সান্ত্বনা নিয়ে যেতে পারেন ভারতের কিংবদন্তি নারী ক্রিকেটার।

ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জিতেই যে বিদায় বলতে পেরেছেন ক্রিকেটকে।

 

ক্রিকেটকে ক্রিকেটকে ক্রিকেটকে

 

সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে ১ কোটি টাকা দেবে সেনাবাহিনী

বিশ্বকাপে নিগার সুলতানারা

Leave A Reply

Your email address will not be published.