শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় নানমাডল জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে। আজ রোববার দেশটির সরকার ওই অঞ্চল থেকে ৩০ লাখ মানুষকে সরে যেতে বলেছে। কয়েক হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
খবর এএফপির।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) দক্ষিণাঞ্চলের কিউশু দ্বীপের কাগোশিমা অঞ্চলে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে। ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস হিসেবে কয়েক দশকের মধ্যে এ ধরনের সতর্কতা দেওয়া হয়নি।
আজ সকালে কাগোশিমা অঞ্চলের ২৫ হাজার ৬৮০ ঘরবাড়ি ও প্রতিবেশী মিয়াজাকি অঞ্চল বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পরিবহনসেবা প্রতিষ্ঠান বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আঞ্চলিক ট্রেন, ফ্লাইট ও ফেরি চলাচল বাতিল করা হয়েছে।
জেএমএ সতর্কতা জারি করে বলেছে, ঝোড়ো বাতাস ও মৌসুমি বৃষ্টির কারণে কাগোশিমা অঞ্চল ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
জেএমএর পূর্বাভাসবিষয়ক বিভাগের প্রধান রিউটো কুরোরা গতকাল শনিবার বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি খুবই বিপজ্জনক। এটি প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রয়োজন।
কুরোরা বন্যা ও ভূমিধসের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছেন। তিনি বলেন, বাতাস এত জোরে বইছে যে কিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হতে পারে।
জাপান সরকারের অগ্নি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা বলছে, কিউশু এলাকার ২৯ লাখ অধিবাসীকে সরিয়ে নিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কাগোশিমার কর্মকর্তারা বলছেন, আজ সকাল পর্যন্ত ৮ হাজার ৫০০ মানুষকে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
আজ সকালে ওই অঞ্চলে বুলেট ট্রেন চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। আঞ্চলিক পর্যায়ে ট্রেন চলাচলও বন্ধ করা হয়েছে। জাপানের সরকারি গণমাধ্যম সংস্থা এনএইচকে বলছে, কমপক্ষে ৫১০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
কাগোশিমার আঞ্চলিক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, বৃষ্টি ও বাতাস জোরে বইছে। বৃষ্টি এত বেশি যে বাইরে কিছু দেখা যাচ্ছে না। সবকিছু সাদা দেখাচ্ছে।
সকাল নয়টার দিকে জাপানের ইয়াকুশিমা দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্বে ঘূর্ণিঝড়ের গতি ছিল ৮০ কিলোমিটার। আজ সন্ধ্যায় কিউশুতে ভূমিধস হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাপানে এখন ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম চলছে। এ বছর ৫০টি ঝড় হয়েছে। ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় হাগিবিসের আঘাতে শতাধিক মানুষ মারা যায় বলে জানায় জাপান। এর এক বছর আগে ঘূর্ণিঝড় জেবির কারণে ওসাকার কানসাই বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ১৪ জন মারা যায়।২০১৮ সালে বন্যা ও ভূমিধসে জাপানে দুই শতাধিক মানুষ মারা যায়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জাপানে ঘূর্ণিঝড়, দাবদাহ, খরা ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা বেড়েছে।
শক্তিশালী শক্তিশালী শক্তিশালী