দিল্লিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে শুরু হওয়া সংঘর্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নেয়া সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ জনে পৌঁছেছে। এতে আহত হয়েছেন আরো ২০০ জন। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, বাড়িঘর, দোকানপাট ও যানবাহন। ভাঙচুর করা হয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা ও স্কুলে।
টানা কয়েকদিনের হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার পর ব্যাপক পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েনের কারণে দিল্লির অবস্থা এখন থমথমে। শুক্রবার সকাল থেকে কিছু এলাকায় ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।
উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের মদদ দেয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে মোদি সরকার দিল্লি পুলিশের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তাকে বদলি করেন।
দায়িত্ব নিয়ে তাই দিল্লির নতুন পুলিশ কমিশনার ঘোষণা দিয়েছেন, অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে৷ দশকের সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক এই দাঙ্গার জন্য দায়ী করা হচ্ছে মোদি সরকারের হিন্দুত্ববাদী পদক্ষেপকে।
টানা কয়েকদিন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির পর শহরটিতে অপেক্ষাকৃত শান্ত পরিবেশ বিরাজ করেছে। স্থানীয় মসজিদগুলোয় শান্তির আহ্বান জানানো হয়েছে। সংঘাতের সময় নিষ্ক্রিয়তার দায়ে অভিযুক্ত দিল্লি পুলিশ এদিন জনগণ ও সংবাদকর্মীদের প্রতি বক্তব্য দিতে আহ্বান জানিয়েছে। এ খবর দিয়েছে দ্য হিন্দু।
খবরে বলা হয়, শুক্রবার দিল্লির উত্তরাংশের মসজিদগুলোয় শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন ধর্মীয় নেতারা। এক ঘোষণায় মসজিদগুলো জনগণের প্রতি শান্তি রক্ষা করতে ও গুজবে কান না দিতে আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া, সন্দেহজন ব্যক্তিদের সম্পর্কে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে ঘোষণায়।
এদিকে, গুরু তেজ হাসপাতালে শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় দাঙ্গায় জখম হওয়া চার ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ জনে। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালটি দাঙ্গায় নিহত হওয়া ২৫ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়া, আরও ১৩ জন আহত অবস্থায় ভর্তি হওয়ার পর মারা গেছেন। অন্যদিকে লোক নায়েক হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে এমন আরো তিন জনের। জাগ প্রকাশ হাসপাতালে মারা গেছেন একজন।
জুমার নামাজের পর থেকেই শহরজুড়ে কড়া নিরাপত্তা জারি রেখেছে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীগুলো। জুম্মার নামাজ উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল, শনিবারও তা অব্যাহত আছে। কিছু এলাকায় জীবনযাত্রা খানিকটা স্বাভাবিক হওয়া শুরু করলেও, বেশিরভাগ জায়গায়ই বন্ধ রয়েছে দোকানপাট। বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা। সোমবার নিরাপত্তা রক্ষায় মোতায়েন করা হয় ৭ হাজার আধাসামরিক সেনা।